নিউজ ডেক্সঃ
চট্টগ্রাম আকবরশাহ থানার তালিকাভুক্ত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, সাজাপ্রাপ্ত পলাতক ও আত্মগোপনকৃত আসামী মোঃ নুর আলম নুরু (৩৭) ও তার সহযোগী কাউছার (৩০) অস্ত্র ও ইয়াবাসহ গ্রেফতার।
আকবরশাহ থানার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী, সাজা পরোয়ানাভুক্ত ও অসংখ্য মামলার আসামী মোঃ নুর আলম নুরু (৩৭) কে গ্রেফতার সহ উক্ত এলাকায় বিভিন্ন ধরণের অপরাধ নির্মূলের উদ্দেশ্যে গত ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ইং তারিখে আকবরশাহ থানা ও ডিবি(পশ্চিম) যৌথ ভাবে পূর্ব ফিরোজশাহ কলোনী নাছিয়াঘোনা গাউছিয়া লেকসিটি সংলগ্ন পাহাড়ী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এসময় নুরু নিজের ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার এড়ানোর লক্ষ্যে, তার সহযোগী -সদস্যদের নিয়ে অতর্কিতে পুলিশ এর উপর হামলা চালায়। পরবর্তীতে নুরু ও তার তার সহযোগীদের গ্রেফতার এবং অপরাধ মূলক কার্যক্রমের উৎপাটনের উদ্দেশ্যে গাউছিয়া লেকসিটি পাহাড়ী এলাকায় একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করে নুরুর ১৩ (তের) জন সহযোগীকে অস্ত্রশস্ত্র ও মাদক সহ গ্রেফতার করা হলেও, নুরু তার অতি পরিচিত পাহাড়ী এলাকার সুবিধা ব্যবহার করে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
নুরুকে আটক করতে আকবরশাহ থানা ও ডিবি (পশ্চিম) বিভাগের একটি যৌথ দল অব্যাহতভাবে কাজ করতে থাকে, তারা তথ্য প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার এবং অনুসন্ধানের বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে নোয়াখালী জেলার প্রত্যন্ত বিভিন্ন চর অঞ্চলে নুরুর অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। সে চর এলাকায় প্রতিনিয়ত স্থান পরিবর্তন করছিল। অবশেষে গত ০৮ জানুয়ারী ২০২১ ইং নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানাধীন শান্তিরহাট এলাকা হতে নুরু ও তার সহযোগী কাউছারকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেপ্তার পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে ০৯ জানুয়ারী ২০২১ ইং তারিখে মধ্য রাতে আকবরশাহ থানাধীন গাউছিয়া লেকসিটি পাহাড়ের পাশে নাছিয়াঘোনা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নুরুর আস্তানা থেকে তার স্বীকারোক্তি ও দেখানো মতে মাটির নিচে কৌশলে লুকিয়ে রাখা আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো দেশীয় অস্ত্র এবং স্টীলের ক্যাবিন্যাটে থাকা মাদকদ্রব্য- ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।
মোঃ নুর আলম নুরু এর অপরাধ জগতের ক্রমবিকাশঃ
মোঃ নুর আলম নুরু (৩৭) জন্ম হতে নাছিয়া ঘোনা ০১নং ঝিল এলাকায় বেড়ে উঠে। কনকর্ড গ্রুপের ফয়ে’সলেকের একজন কর্মচারী হিসেবে কর্মজীবন শুরু। সেখান থেকেই পাহাড় নিয়ে তার যাত্রা- যা আর থেমে থাকেনি। শুরু হয় তার পাহাড়ে বসবাস, প্রথম প্রথম বিভিন্ন ধরনের ছোট অপরাাধ ও চুরি করে পাহাড় কাটার মাধ্যমে তার অপরাধের শুরু!যা ক্রমান্বয়ে তাকে আত্মবিশ্বাসী করে অপরাধ কার্যে আরো উদ্বুদ্ধ ও সাহসী করে তোলে। সে ০১নং ঝিলের পাশে নাছিয়াঘোনার পাহাড়ী এলাকায় একক নিয়ন্ত্রণ বিস্তার করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী তৈরী করে। তার বাহিনীতে প্রায় ৫০/৬০ জন সক্রিয় সদস্য রয়েছে। বাহিনীর লোকজন দিয়ে বিগত প্রায় ১ যুগ থেকে পাহাড়ী এলাকায় পাহাড় দখল, পাহাড়কাটা, পাহাড়ের সেগুনগাছ কাটা, অপহরণ, ধর্ষণ, মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল। দখল ও আদিপত্য বিস্তারের নেশায় সে আত্মহারা হয়ে যায়। পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাস করে, পাহাড় কাটা, অবৈধভাবে দখলকৃত জায়গায় ঘর নির্মাণ করে প্লট বিক্রি সহ চাঁদাবাজী, ফয়েস’লেক কেন্দ্রিক পাহাড়ে মূল্যবান গাছ কেটে পাচার করে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করে এবং পাহাড়ের লোকজনকে আটক করে মুক্তিপন আদায় করে। পাহাড় দখল ও অন্যান্য অপরাধামূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করার সময় এলাকার লোকজনকে ভীতি প্রদর্শনের জন্য আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় তৈরী ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করে।
নুরু অবৈধভাবে পাহাড় দখলের জন্য ভুয়া কবর তৈরী করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে অবৈধভাবে ঘর বাড়ি তৈরী করে। পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার এড়ানোর লক্ষ্যে সে পাহাড়ী এলাকায় গমনাগমনের বিভিন্ন পথে তার নিজস্ব বাহিনী সদস্য দিয়ে আইন শৃংখলা বাহিনীর গতিবিধির নিয়মিত সংবাদ সংগ্রহ এবং তার নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষনিক সশস্ত্র সদস্যরা নিয়োজিত থাকে।