লাগামহীন পেঁয়াজের বাজার। সপ্তাহ ব্যবধানে দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকা। স্বয়ং পাইকাররা বলছেন, বাজার তদারকির অভাবের কথা। দাম বৃদ্ধির এই প্রবণতাকে অস্বাভাবিক বলছেন বিশ্লেষকরা। এভাবে বাজার অস্থিতিশীল করার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি ভোক্তা অধিকার সংগঠন-ক্যাবের। এদিকে চার দিনের ব্যবধানে প্রতিকেজি কাঁচামরিচের দাম বেড়েছে ১শ’ টাকা পর্যন্ত, উর্ধ্বমুখী রসুনের বাজারও।
শুধু পেঁয়াজ নয়, দামের ঊর্ধ্বগতি কাঁচামরিচ আর রসুনের বাজারেও। বাজারে দাম পর্যবেক্ষণ করলেও, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের তেমন উদ্যোগ নেই বলে মনে করেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তাদের আশঙ্কা কোরবানির আগে দাম বাড়বে আরও।
দেশে এবার পেঁয়াজের উৎপাদন পর্যাপ্ত হয়েছে, এমন তথ্য চাষী-ব্যবসায়ী সবার। বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় পেঁয়াজ রপ্তানিকারক দেশ ভারতের বাজারেও প্রতিকেজি পেঁয়াজ বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৭ টাকার মধ্যেই। আমদানি-রপ্তানি পর্যায়ে তৈরি হয়নি কোন প্রতিবন্ধকতা। নেই কোন পরিবহন সংকটও। এরপরও এমন দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে সরবরাহ ঘাটতিকে দায়ী করা হলে, বাজার বিশ্লেষকদের কাছে নেই এর যৌক্তিক কোনো ব্যাখ্যা।
অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ হেলাল বলেন, এক সপ্তাহে ২০ টাকা বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক। আমার কাছে মনে হয় না এভাবে বাড়ার কোনো কারণ আছে।
ভোক্তার অধিকার ক্ষুণ্ণ করে অযৌক্তিকভাবে পণ্যের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি ক্যাবের।
বছর জুড়ে দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ২৭ থেকে ২৮ লাখ টন, আর উৎপাদন হয় ১৮ থেকে ২০ লাখ টন। আমদানি করা হয় ৭-৮ লাখ টন, যার বেশিরভাগই আসে ভারত থেকে।
সরকারি হিসাবেই এক সপ্তাহের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০ টাকা। বেশ বড় অংকের টাকা বেড়িয়ে গেছে ভোক্তার পকেট থেকে। বাজার ব্যবস্থাপনার এমন দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পণ্যের উৎপাদন, চাহিদা, যোগান, আমদানি, সংরক্ষণ, পরিবহন প্রতিধাপে কার্যকর নজরদারি করতে হবে সরকারকে। তা না হলে মাঝে মাঝে নিয়ন্ত্রণহীন এমন বাজারের লাগাম টানতে টানতেই চড়া মূল্য দিতে হবে নিত্যপণ্যের বাজারে হিমশিম খাওয়া ভোক্তাদের।