শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) উদ্যোক্তাদের মূলধন সহায়তা হিসেবে অর্থের পরিমান আরো বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এসএমই ফাউন্ডেশন থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তারা মূলধন হিসেবে যে আর্থিক সহায়তা পান, তা আরও বৃদ্ধি করার পাশাপাশি সহায়তার প্রক্রিয়াও সহজ করা দরকার। এতে এখাতে কর্মসংস্থান আরও বৃদ্ধি পাবে এবং মানসম্মত পণ্য উৎপাদনও সম্ভব হবে।’
শিল্প মন্ত্রী গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ৭ম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা-২০১৯’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন কে এম হাবিব উল্ল¬াহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও শিল্প সচিব মো. আবদুল হালিম।
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প পণ্যকে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার উপযোগি করে তুলতে হবে। স্থানীয়ভাবে বছরজুড়ে এসকল পণ্যের মেলা ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, এসএমই ফাউন্ডেশন দেশে নারীদের জন্য কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে নারী জাগরণে ভূমিকা রাখছে। এতে নিজ পরিম-লে নারীদের আর্থিক সক্ষমতা ও সম্মান বৃদ্ধি পেয়েছে।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদেশে বাংলাদেশী দূতাবাস/হাইকমিশনে এবং দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসমূহে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে উৎপাদিত পণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয়কেন্দ্র স্থাপনের সুযোগ করে দিতে হবে। এসকল পণ্যের প্রচারও বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন,দেশের ১৬ কোটি মানুষের ৩২ কোটি হাতকে কর্মীর হাতে পরিণত করা সম্ভব হলে দেশ হতে দারিদ্র্য বিমোচন করাও সম্ভব হবে। এজন্য দেশের তরুণ ও যুবকদের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বিনিয়োগে উৎসাহ সৃষ্টি করার উদ্যোগ নিতে হবে।
শিল্পসচিব বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ভারী শিল্পের সহায়ক হিসেবে কাজ করে যা সামগ্রিকভাবে দেশে শিল্প বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো বংশানুক্রমিকভাবে পরিচালিত। প্রশিক্ষণ প্রদান ও নতুন প্রযুক্তির ব্যাবহারের মাধ্যমে এসকল পণ্যকে বিশ্বমানের করতে হবে।
এ অনুষ্ঠানে ৬ টি ক্যাটাগরিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তাদের মাঝে ‘জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার-২০১৯’ প্রদান করা হয়। বর্ষসেরা মাইক্রো উদ্যোক্তা হিসেবে নারী ক্যাটাগরিতে চাপাইনবাবগঞ্জ সদরের নুর নকশী মহিলা জাগরণের স্বত্বাধিকারী তাহারিমা বেগম, বর্ষসেরা মাইক্রো উদ্যোক্তা-পুরুষ ক্যাটাগরিতে চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জের জনতা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্বত্বাধিকারী মো. ওলি উল্ল¬াহ, বর্ষসেরা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা- নারী ক্যাটাগরিতে পাবনার ভাংগুরার এস আর হ্যান্ডিক্রাফটসের স্বত্বাধিকারী সুমনা সুলতানা সাথী, বর্ষসেরা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা- পুরুষ ক্যাটাগরিতে ঢাকার কেরানীগঞ্জের মহিউদ্দিন ইঞ্জিনিয়ার্স এন্ড ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মহিউদ্দিন, বর্ষসেরা মাঝারি উদ্যোক্তা- নারী ক্যাটাগরিতে গাজিপুরের কাশিমপুরের কুসুমকলি সু ফ্যাক্টরির স্বত্বাধিকারী নাজমা খাতুন এবং বিশেষ ক্যাটাগরিতে জামালপুরের মুকুন্দবাড়ীর সিড়ি হস্তশিল্পের স্বত্বাধিকারী আরিফা ইয়াসমিন ময়ুরী পুরস্কার লাভ করেন।
এ মেলায় দেশে উৎপাদিত পাটজাত পণ্য, খাদ্য ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, চামড়াজাত সামগ্রী , ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য, প্লাস্টিক ও অন্যান্য সিনথেটিক পণ্য, হস্তশিল্প, ডিজাইন ও ফ্যাশনওয়্যারসহ অন্যান্য মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ২৮০টি ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে।
শনিবার থেকে সপ্তাহব্যাপী এসএমই পণ্য মেলা শুরু হলেও আগামী ২২ মার্চ পর্যন্ত এ মেলা চলবে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে।