যে কোন রাজনৈতিক দলের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে নতুন কর্মীরা যোগদান বা প্রবেশ করবে এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু বুঝতে হবে কোনটি প্রবেশ, কোনটি অনুপ্রবেশ। এ ক্ষেত্রে অনুপ্রবেশ শব্দটি ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন।
ইংরেজি শব্দ Infiltrate এর সমার্থক শব্দ ‘Penetrate`। বাংলা অর্থ:
১ ‘অনুপ্রবেশ করা‘বা ‘গোপন এবং অবৈধ প্রবেশ‘
২ (সেনাদল সম্বন্ধে) অলক্ষ্যে শত্রুপক্ষের প্রতিরক্ষা-ব্যুহ ভেদ করা। এই শব্দের ব্যাখ্যা: বিশেষ করে গোপন তথ্য অর্জন বা ক্ষতির কারণ হিসাবে কোনও সংস্থা বা স্থানটিতে গোপনীয়তার সাথে প্রবেশ বা প্রবেশের ক্রিয়া।(‘enter or gain access to an organization, place, etc. surreptitiously and gradually, especially in order to acquire secret information.)
রাজনীতিতে ‘অনুপ্রবেশকারী’ শব্দটি বিতর্কিত টার্ম। কে কখন কীভাবে একটি দলে প্রবেশ করেন এবং কখন তার এই প্রবেশকে অনুপ্রবেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে—সেটি পারিপার্শিক অনেক কিছুর উপরে নির্ভর করে। এটা চিহ্নিত করার সর্বজন গ্রহনযোগ্য কোনো মানদণ্ড নেই।
প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নির্দিষ্ট আদর্শ ও কিছু নীতিমালাসহ গঠনতন্ত্র থাকে। সেই আদর্শ ও নীতিমালা মেনে যে কোনো লোকই সংগঠনের সদস্য হতে পারেন বা প্রবেশ করতে পারেন। কিন্তু একসময় যিনি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী সংগঠন জামাত করতেন, জামাতের অনুসারী ছিলেন বা ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বেনিফিশিয়ারি জিয়ার আদর্শে গঠিত সংগঠন করতেন, বা জিয়ার আদর্শের অনুসারী ছিলেন, তাকে নিশ্চয়ই মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দল আওয়ামী লীগে সদস্য করা সম্ভব নয়। কারন আদর্শিক পার্থক্য। এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে জামায়াত-বিএনপি রাজনীতির সাথে যুক্ত প্রচুর লোক আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন, প্রতিনিয়ত যোগ দিচ্ছেন। স্থানীয় এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে তারা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন, এরকম অজস্র ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় নৌকা মার্কায় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপি জামাতের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। ‘নৌকা‘ মার্কায় মনোনয়নপ্রাপ্ত অন্তত ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যারা পৈতৃকসূত্রে রাজাকারের সন্তান বা যুদ্ধাপরাধীদের সন্তান। আওয়ামী লীগের ত্যাগী, পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা বলছেন, আওয়ামী লীগের নৌকায় ছদ্মবেশী ডাকাত ঢুকেছে। এখন এরা সবকিছু লুণ্ঠন করবে। নৌকা ডুবিয়ে দেবে। শুধু তাই নয়, ওরা সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক বিভিন্ন পদ-পদবীসহ সরকারের নীতি নির্ধারণী পদ জাতীয় সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নীতিনির্ধারণী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির পদও দখল করে নিয়েছেন।
এখন প্রশ্ন হলো, জামাত-বিএনপির লোক কি কারনে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন আওয়ামী লীগে যোগদান করেন?
একটু পিছনে ফিরে তাকাই। আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন বক্তৃতা-বিবৃতিতে প্রায়শই বলে থাকেন, জিয়াউর রহমান দেশ স্বাধীন করার জন্য নয় অনুপ্রবেশকারী হিসেবে, পাকিস্তানের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি করার জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছে। সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি থেমে থাকেনি।
পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা হিসেবে স্বাধীনতা বিরোধীদের স্বার্থ উদ্ধারে জিয়াউর রহমান গুপ্তচরবৃত্তি চালিয়ে যান। সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও দলীয় নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ স্থাপন করেন। খন্দকার মোশতাক, মাহবুবুল আলম চাষী ও তাহেরউদ্দিন ঠাকুরদের সাথে সম্পৃক্ত হয়। জিয়াউর রহমানের সন্দেহজনক গতিবিধির কারনে তৎকালীন সরকার জিয়াতে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব দিয়ে দেশের বাইরে পাঠানোর আদেশ জারি করে। কিন্তু কয়েকজন সিনিয়র আয়ামী লীগ নেতা তদবীর করে সেই আদেশ বাতিল করিয়েছিলেন। জিয়ার নেতৃত্বে অনুপ্রবেশকারীরা সুযোগ বুঝে খন্দকার মোশতাকদের সাথে নিয়ে উচ্চাভিলাসী কয়েকজন পথভ্রষ্ট সেনাকর্মকর্তাদের দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডের মূল বেনিফিশিয়ারি জিয়াউর রহমান, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে। দল গঠন করে। জিয়ার নেতৃত্বে গঠিত দল বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে স্বাধীনতা বিরোধীদের মূল নেতা গোলাম আজমকে নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিয়ে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনে এবং সামরিক বাহিনীতে কর্মরত ৫ শতাধিক মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের কর্মকর্তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে। এসবই ছিল স্বাধীনতাবিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ। বেগম খালেদা জিয়া ও তার পুত্র ২০০৪ সালে শেখ হাসিনাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গ্রেনেড হামলা করে। মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে শেখ হাসিনা আহত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। এসবই স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে নির্মুল করা ও স্বাধীনতার মূল্যবোধকে নস্যাৎ করার জন্য।
তারপর দীর্ঘ ১৮ বৎসর আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় অগনিত শহীদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী ও ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বেনিফিশিয়ারি বিএনপি- জামাতের ষড়যন্ত্র বন্ধ হয়নি। ওরা অতি সুকৌশলে ‘ক্ষমতা’র খুব কাছাকাছি থেকে পূর্বসূরিদের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরনে সক্রিয় রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শী নেতৃত্বে খুবই সুনামের সাথে দীর্ঘ ১৩ বছর সরকার পরিচালিত হচ্ছে। বিরোধীদল সরকারের বিরুদ্ধে কোন আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারলেও স্বাধীনতাবিরোধী ও ১৫ আগস্টের ষড়যন্ত্রকারীরা হাত গুটিয়ে বসে নেই।
গত ৩১ আগস্ট ২০২১, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধ শক্তি ও ১৫ আগস্টের খুনিদের দোসররা এখনও ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে’। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন।
স্বাধীনতা বিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই বিএনপি জামাতের লোকগুলোকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ে বসিয়ে দিয়ে ষড়যন্ত্রের জাল তৃনমূল পর্যায়ে পর্যন্ত বিস্তৃত করছে। পদ-পদবী পেতে, প্রয়োজনে ওরা অর্থ বিনিয়োগ করছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক, তৃণমূল থেকে গড়ে উঠা অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ জনাব মির্জা আজম এমপি সম্প্রতি বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে পদ-বানিজ্য একটি পুজিবিহীন লাভজনক ব্যবসা হয়ে দাড়িয়েছে‘। তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামীলীগ আয়োজিত একটি কর্মীসভায় বলেছেন, ‘বিএনপি ঘরানার এক শিল্পপতির দুই ছেলে (বয়স ১৯ ও ২১ বছর) মহানগর আওয়ামীলীগের দুই থানা (শ্যামপুর ও কদমতলী) কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন‘।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই দুইজন কোনদিন কোথায়ও আওয়ামীলীগ বা অংগ-সহযোগী সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন না। সারাদেশে আওয়ামীলীগ এর বিভিন্ন শাখায় এমন উদাহরণ অনেক রয়েছে।
স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা বিরোধীদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য অনুপ্রবেশ করেছিল, মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায়, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল। পরবর্তিতেও অনুপ্রবেশ বন্ধ ছিল না। ৭৫ এর হত্যাকাণ্ডের বেনিফিশিয়ারি বিএনপি জামাতের নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে নিয়মিত আওয়ামী লীগে যোগদান করছে। স্বাধীনতার মূল্যবোধকে নস্যাৎ করার জন্য ৭১, ৭৫, ২০০৪ সালের ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য ২০০৬ সালে ‘এক/এগারো’ ঘটিয়েছিল। ‘এক/এগারো’র পর জনৈক সুশীল শেখ হাসিনাকে বাক্সবন্দি করে বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপ করার কথাও বলেছিলেন। পরবর্তীতে ঐ সুশীল আওয়ামী লীগ সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদেও আসীন হয়েছিলেন।
এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য সেসময়ের অনেক প্রভাবশালী (?) অনুপ্রবেশকারী নেতা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার পাশে থেকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ে নিজস্ব লোকদের দলীয় পদ-পদবী দিয়ে আওয়ামীলীগের মধ্যে নিজস্ব বলয় তৈরী করেছিলেন। ঐ প্রভাবশালী নেতা সবসময়েই তার অনুসারীদের নিয়ে দলেবলে চলাফেরা করতেন। আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মী ও জনগণের চাপে এক-এগারো ষড়যন্ত্রকারীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু ওদের পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনে পদ-পদবীপ্রাপ্ত তাদের বলয়ের লোকগুলো সংগঠনে বহাল রয়েছে, পরিকল্পিতভাবে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখছে এবং সংগঠনবিরোধী সুক্ষ্ম ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
৭৫ এর খন্দকার মোশতাকরা যেমনিভাবে সুকৌশলে বঙ্গবন্ধুর কাছের মানুষগুলো দুরে সরিয়ে দিয়েছিল, ঠিক তেমনিভাবে একালের মোশতাক (অনুপ্রবেশকারী)রা শেখ হাসিনার বিশ্বস্থ লোকগুলোকে দুরে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
অনুপ্রবেশকারীরা কখনই সংগঠনের শুভাকাঙ্ক্ষী হতে পারে না।
সম্প্রতি আলোচিত হচ্ছে, ২০০৮ সালের পর আওয়ামী লীগে যোগদানকারীরা অনুপ্রবেশকারী। অর্থাৎ এরপূর্বে আওয়ামী লীগে যোগদানকারীরা অনুপ্রবেশকারী নন। ওরা ‘হালাল‘ হয়ে গেছে কারণ, ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ পর্যন্ত দুঃসময় ছিল‘।
কিন্তু এটাও ঠিক, ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের বেনিফিশিয়ারি বিএনপি-জামাতের নেতাকর্মীরা, যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী জিয়ার আদর্শের অনুসারী, বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকদের নির্যাতন করেছে, বাংলাদেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে চেয়েছিল, তারা ২০০১ সালের পর স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আওয়ামীলীগের নীতি-আদর্শের ধারক বাহক হতে পারে না। অনুপ্রবেশকারী সবসময়ই অনুপ্রবেশকারী। রাজাকার সবসময়ই রাজাকার। নির্দিষ্ট কোন সময়ের ফ্রেমে বাঁধা যাবে না।
অনুপ্রবেশকারী শব্দের আক্ষরিক ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে: গোপন তথ্য অর্জন বা ক্ষতির কারণ হিসাবে কোনও সংস্থা বা স্থানটিতে গোপনীয়তার সাথে প্রবেশ বা প্রবেশের ক্রিয়া বা কোনও কিছুর অংশ হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া। সুতরাং অনুপ্রবেশকারীরা কখনই সংগঠনের জন্য কল্যাণকর নয়, ক্ষতির কারণ।
স্বাধীনতাবিরোধী ও ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বেনিফিশিয়ারি বিএনপি-জামাতের নেতাকর্মীরা সুকৌশলে আওয়ামী লীগের ক্ষতিসাধন করার জন্য সুপরিকল্পিতভাবে নিয়মিত আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশ করছে। কোন নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বের অনুপ্রবেশকারীরা ক্ষতিকর নয়, ‘ধোয়াতুলসী‘। এ যুক্তি গ্রহনযোগ্য নয়। জিয়াউর রহমানসহ বিএনপি জামাত থেকে আসা সকল অনুপ্রবেশকারী সমান অপরাধী। স্বাধীনতার মূল্যবোধ নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে অনুপ্রবেশকারীদের আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কার করা জরুরি।
পদপদবী পেতে অর্থ বিনিয়োগকারী এবং অর্থ বিনিয়োগে সহায়তাকারী নেতাদেরও চিহ্নিত করা জরুরি। এরাও বর্তমান কালের ‘মোশতাক’, এরা ‘মোনাফেক‘। ইসলাম ধর্মীয় বিধানমতে, যে মুসলমান ধর্মীয় বিধান জানেন কিন্তু মেনে চলেন না, তিনি মোনাফেক। সুতরাং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যে সকল নেতাকর্মী বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বাধীনতার মূল্যবোধে বিশ্বাসী সেই তারা যদি অর্থের বিনিময়ে স্বাধীনতা বিরোধী বা বিএনপি জামাতের নেতাকর্মীদের আওয়ামীলীগার হিসেবে সার্টিফিকেট দেয় বা পদ-পদবী প্রদান করে তবে তারা ‘আওয়ামীলীগের মোনাফেক‘। কাজেই সময়ের এই সকল মোনাফেক নেতাদের চিহ্নিত করা জরুরি বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকগল মনে করেন।
আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন যে, অনতিবিলম্বে যদি আওয়ামী লীগের এই অনুপ্রবেশকারীদের দাপট ঠেকানো না যায়, বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধী, বিএনপি জামাতের নেতাকর্মীদের অনুপ্রবেশ যদি ঠেকানো না যায় তাহলে পরে ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগের জন্য অশনিসংকেত তৈরি হবে।
ড. মোঃ আওলাদ হোসেন
ভেটেরিনারীয়ান, পরিবেশবিজ্ঞানী, রাজনৈতিক কর্মী ও কলামিস্ট, ঢাকা, বাংলাদেশ।