ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলাসহ ১৬ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ করে মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) জমা দিয়েছে পিবিআই।বুধবার দুপুরে ফেনীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দাখিল করে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (বিপিআই)। ঘটনার এক মাস ২১ দিনের মাথায় মামলাটির চার্জশিট দেয়া হলো।চার্জশিটে ১৬ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি (মৃত্যুদণ্ড) নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে দন্তকারী সংস্থাটি। আজ যে চার্জশিট জমা দেয়া হতে পারে সেটি গতকালই জানানো হয়েছিল।বাকি আসামিরা হলেন- সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাকসুদ আলম (৫০), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন (১৯), হাফেজ আবদুল কাদের (২৫), আফছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মণি (১৯), উম্মে সুলতানা পপি (১৯), আবদুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন মামুন (২২), মোহাম্মদ শমীম (২০) ও মহিউদ্দিন শাকিল (২০)।ধানমন্ডিতে পিবিআই সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে গতকাল মঙ্গলবার সংস্থাটির প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার জানান, ৭২২ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ সিরাজকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। তিনি হত্যাকাণ্ডের সময় জেলে থাকলেও তার নির্দেশনায়ই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার মিশনে সরাসরি অংশ নেন পাঁচজন।বনজ কুমার মজুমদার জানান, ২৬ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলা তার অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন হয়রানি করেন। রাফি এর প্রতিবাদ করেন এবং এ বিষয়ে রাফির মা শিরীন আক্তার মামলা করলে পুলিশ অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।ওই মামলা প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছিল নুসরাত ও তার পরিবারকে। কিন্তু মামলা তুলে না নেয়ায় ৬ এপ্রিল মাদরাসার একটি ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে রাফির গায়ে আগুন দেয় বোরকা পরা কয়েকজন। আগুনে শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়া রাফি ১০ এপ্রিল রাতে হাসপাতালে মারা যান।তিনি আরও বলেন, রাফির গায়ে আগুন দেয়ার পর ৮ এপ্রিল তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান অধ্যক্ষ সিরাজকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। রাফির মৃত্যুর পর তা হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।