৮৭ দিনের অনশন শেষে ইসরায়েলি কারাগারে মৃত্যু হয়েছে ফিলিস্তিনি বন্দি শেখ খাদের আদনানের। ইহুদি কারা কর্তৃপক্ষের সাফাই, চিকিৎসা সেবা নিতে অসম্মতি প্রকাশ করেন তিনি। খবর সিএনএন।
আজ মঙ্গলবার (২ মে) সকালে নিজস্ব সেলে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয় খাদের আদনানকে। একে ঠান্ডা মাথার খুন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন ইসলামিক জিহাদ। তারা হুমকি দিয়েছে, শহিদের মৃত্যু বৃথা যেতে দেবে না। এই মৃত্যুর মোক্ষম জবাব পাবে দখলদার রাষ্ট্র ইসরায়েল।
২০১৫ সালেও ইসরায়েলি কারাগারে টানা ৫৫ দিনের অনশন-ধর্মঘটের পর মুক্তি পান ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী খাদের আদনান। তার অভিযোগ ছিল, নির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই তাকে আটক করেছিল তৎকালীন প্রশাসন। এমনকি, তাকে আদালতের মুখোমুখিও করা হয়নি। ৯ সন্তানের জনক আদনান জীবনে ১২ বার বন্দি হয়েছেন।
চলতি বছরও সশস্ত্র স্বাধীনতাকামী সংগঠন ইসলামিক জিহাদের সাথে যোগসাজশের অভিযোগে তাকে আবারও গ্রেফতার করে নেতানিয়াহু সরকার। যদিও ৪৫ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনির অভিযোগ ছিল, তিনি প্রশাসনিক আটকাদেশের শিকার। এর প্রতিবাদে খাঁদের আদনান শুরু করেন অনশন ও ধর্মঘট। তিনি টানা ৮৭ দিন অভুক্ত ছিলেন।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
অবশেষে, মঙ্গলবার সকালে নিজস্ব সেলে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে ইহুদি কারা কর্তৃপক্ষ। তড়িঘড়ি নেয়া হয় হাসপাতালে। কিন্তু সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। প্রশাসন জানিয়েছে, খাদের আদনান নাকচ করেছেন চিকিৎসা সেবা; ন্যূনতম স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুযোগও দেননি তিনি।
স্বাধীনতাকামী খাদের আদনানের মৃত্যুতে বিক্ষোভ মিছিল করছেন ফিলিস্তিনিরা। পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকায় চলছে ধর্মঘট। ইসলামিক জিহাদ হুমকি দিয়ে বলেছে, ইসরায়েলকে কড়ায়গণ্ডায় চুকোতে হবে এই হত্যাকাণ্ডের মূল্য।
ইসলামিক জিহাদের মুখপাত্র দাঊদ শিহাব বলেন, খাদের আদনান নিঃসন্দেহে ফিলিস্তিনের হিরো। তার নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তার মৃত্যুর পেছনে রয়েছে জায়নবাদী সরকার। দখলদার রাষ্ট্রকেই এই অপরাধের দায়ভার বহন করতে হবে। যে বা যারাই এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত, তাদের মোক্ষম সাজা দেয়া হবে। নিস্তার পাবে না বর্বর-নিষ্ঠুর প্রশাসন।
মানবাধিকার সংগঠন আদ্দামির অর্গানাইজেশনের তথ্য অনুসারে, ইসরায়েলের কারাগার ও বন্দিশালাগুলোয় আটক রয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার ফিলিস্তিনি। যাদের মধ্যে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই সাজা পাচ্ছেন হাজারের ওপর মানুষ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রয়েছে চারটি কেন্দ্র। এমনকি, গোপনে শাস্তি প্রদানের জন্য ব্যবহৃত হয় দু’টি সামরিক আদালত।
ডিবিএন/ডিআর/মাহমুদা ইয়াসমিন