বাংলাদেশ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতির মাঝেও দীর্ঘ বিরতির পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে যাচ্ছে। শ্রীলঙ্কা সফরের মধ্য দিয়ে আগামী ২৪ অক্টোবর প্রথমবারের মতো মাঠে নামবে টাইগাররা। যদিও গত জুলাইয়েই শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু করোনার কারণে সেই সফর পিছিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান বুধবার জানান, সফরে যাওয়ার সম্ভাব্য একটি সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। ঠিক করা হয়েছে খেলা শুরুর সময়।
তিনি বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে দেশে ক্যাম্প করব। দেশে হয়তো ১০-১২ দিন অনুশীলন করে আমরা এইচপি দলকে নিয়ে শ্রীলঙ্কা চলে যাব। সেখানে প্রায় ২০-২৫ দিন আমরা এক সঙ্গে অনুশীলন করব। অক্টোবরের ২৪ তারিখ আমাদের খেলা আছে। সেপ্টেম্বরের শুরুতে কোচদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব আমরা।’
গত ১১ মার্চ দেশের মাটিতে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওই টি-টোয়েন্টির পর থেকে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাইরে আছেন তামিম ইকবাল-মুশফিকুর রহিমরা।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সভা শেষে আকরাম জানান, কয়েক দফায় করোনা ভাইরাস পরীক্ষার ভাবনা রয়েছে তাদের।
আকরাম খান বলেন, ‘আপাতত হোটেলের কথা চিন্তা করেছি। আমরা দুই-তিনবার টেস্ট করাব। এটা নিয়ে আমাদের আরও পরিকল্পনা আছে। আমরা পরে জানিয়ে দিব। ওখানে যাওয়ার আগে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আসা একটা সার্টিফিকেট নিয়ে যেতে হবে। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর সেখানে গেলে তারাও পরীক্ষা করাবে। কতদিন থাকতে হবে সেটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
তিনি বলেন, ‘আপাতত কলম্বোর কথা বলেছে ওরা আমাদের। এখনো সময় আছে, আর যেহেতু কলম্বোতে সুযোগ সুবিধা ভালো, হাসপাতাল থেকে সবকিছু উন্নত মানের আছে। এসব আসলে আলাপ-আলোচনার মধ্যে আছে। তবে আপাতত পরিস্থিতি এমন থাকলে আমরা সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি অনুশীলন শুরু করব।’
মার্চের পর থেকে ক্রিকেটাররা খেলার বাইরে থাকায় কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে উল্লেখ করে সাবেক অধিনায়ক আকরাম বলেন, ‘যেকোনো সিরিজ বা সফরে তিনটি টেস্ট খেলা দারুণ কিছু। তবে এবার আমাদের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ। কারণ আমরা চার-পাঁচ মাস ধরে একেবারে মাঠের বাইরে। মাঠে যারা খেলবে তাদের কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। তাদের প্রস্তুতির জন্য আমরা সেরা পরিকল্পনা তৈরি করেছি। আশা করছি, পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারব।’
তিনি আরও বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা সফরে প্রথম তিন সপ্তাহের খরচ আমরা বহন করব। সেটা এইচপি দলেরও। আমাদের এইচপি দলেরও শ্রীলঙ্কা যাওয়ার কথা ছিল জুলাইয়ে। ওই সফরটা পিছিয়ে এখন আয়োজন হচ্ছে। দুই দল একসঙ্গে সফর করবে এবং ওখানে শুরুতে একসঙ্গে অনুশীলন ও ম্যাচ খেলবে।’
বিষয়টিতে এইচপি কমিটির চেয়ারম্যান ও বিসিবি পরিচালক নাঈমুর রহমান জানান, জাতীয় দলকে সাহায্য করতেই এক সঙ্গে শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘যাওয়ার আগে জাতীয় দল ও এইচপির একটি কন্ডিশনিং ক্যাম্প হবে দেশে। তবে মূল ক্যাম্পটা হবে শ্রীলঙ্কাতে। জাতীয় দল যখন সিরিজে চলে যাবে তখন শ্রীলঙ্কাতে এইচপির যে সিরিজটি আছে আমরা সেটাতে চলে যাব।’
বিসিবি পরিচালক বলেন, ‘যাওয়ার তারিখটা হয়তো একটু এদিক ওদিক হতে পারে। সেপ্টেম্বরের ২৩ তারিখে যাওয়ার কথা রয়েছে। জাতীয় দলের যে সিরিজটা আছে সেখানে শ্রীলঙ্কা ওদের জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের ছাড়া অন্য কাউকে যোগ করতে চাচ্ছে না।’
বিসিবি পরিচালক আরও বলেন, ‘এক সঙ্গে গেলে জাতীয় দলের সাহায্য হবে, আমাদেরও সাহায্য হবে। এইচপিরও একটা ভালো অভিজ্ঞতা হবে। জাতীয় দলের জন্য ওরা অনেক কম প্রস্তুতি ম্যাচ প্রস্তাব করেছে। আমাদের এইচপির প্লেয়ারদের জাতীয় দলের প্লেয়ারদের সঙ্গে খেলার এবং থাকার ভালো অভিজ্ঞতা হবে।’