১৯ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে চলতি বছরে করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশের হজ্জযাত্রী যেতে না পারায় নিবন্ধন বাতিলের আবেদন। কেউ নিবন্ধন বাতিল না করলে তার নিবন্ধন ২০২১ সালের জন্য কার্যকর থাকবে।
করোনা ভাইরাসের কারণে সৌদি আরব সরকার বাইরে থেকে হজযাত্রীদের হজ্জ পালনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। গতকাল এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগ এ তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, করোনা ভাইরাস মহামারিজনিত কারণে এ বছর অন্য দেশ থেকে কোনো হজযাত্রী হজ্জ পালন করতে সৌদি আরবে যেতে পারবেন না। সৌদি আরবে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের নাগরিক ও সৌদি আরবের নাগরিকদের অংশগ্রহণে সীমিত পরিসরে হজ অনুষ্ঠিত হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালে বাংলাদেশ থেকে হজ্জ পালনের জন্য প্রাক-নিবন্ধিত ও নিবন্ধিত ব্যক্তিদের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সিদ্ধান্তসমূহ হলো—২০২০ সালে হজ্জ পালনের জন্য যাদের প্রাক-নিবন্ধনের মেয়াদ বৈধ ছিল, তা ২০২১ সালের জন্য বলবত্ থাকবে। সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় যেসব প্রাক-নিবন্ধিত ব্যক্তি ২০২০ সালের হজ্জের জন্য নিবন্ধন করেছিলেন, তাদের নিবন্ধন ২০২১ সালের জন্য বৈধ থাকবে। নিবন্ধনকারী হজ্জযাত্রীদের জমা টাকা ২০২১ সালের প্যাকেজ মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। ২০২০ সালের হজযাত্রী নিবন্ধন বাতিল বিষয়ে ই-হজ্জ সিস্টেমের ওপর সব ব্যাংকের প্রতিনিধি, নিবন্ধনকেন্দ্রের প্রতিনিধি এবং হজ্জযাত্রী নিবন্ধনকারী এজেন্সির প্রতিনিধিদের ১৩ জুলাই থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। হজ্জ পালনের জন্য সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী নিবন্ধন বাতিল করতে চাইলে আগামী ১৯ জুলাই থেকে হজ্জ পোর্টাল www.hail.gov.bd অথবা
https://prp.pilgrimbd.org/ hajrefund লিংকে নিজে বা নিবন্ধন কেন্দ্র থেকে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন অনুমোদিত হলে তার অনুকূলে নিবন্ধন বাতিল ভাউচার তৈরি হবে এবং ২০২০ সালের নিবন্ধন ও প্রাক-নিবন্ধন উভয়ই বাতিল হবে। সেক্ষেত্রে কোনো ধরনের কর্তন ছাড়া প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধনের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি ব্যবস্থাপনার হজ্জ নিবন্ধন বাতিলকারী ব্যক্তির ক্ষেত্রে সোনালী ব্যাংক থেকে প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধনের জন্য জমা সমুদয় অর্থ অনলাইনে সরাসরি হজযাত্রীর অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হবে। কোনো হজ্জযাত্রীর ব্যাংক হিসাব না থাকলে তার ইচ্ছানুযায়ী পে-অর্ডারের মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে। এজন্য তাকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে নিবন্ধন বাতিল ভাউচার ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজ্জযাত্রীদের ক্ষেত্রে নিবন্ধনের জন্য জমা সমুদয় অর্থ হজ্জযাত্রীর ইচ্ছানুযায়ী সরাসরি নিবন্ধনকারী ব্যাংক থেকে অনলাইনে হজ্জযাত্রীর অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর অথবা এজেন্সির মাধ্যমে দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে প্রাক-নিবন্ধনের জন্য জমা অর্থ আগের মতো পরিচালক, হজ্জ অফিস, ঢাকা থেকে হজ্জযাত্রীর ইচ্ছানুযায়ী সরাসরি অথবা এজেন্সির মাধ্যমে ফেরত দেওয়া হবে। ২০২০ সালে নিবন্ধনকারী হজ্জযাত্রীদের জমা টাকা ২০২১ সালের প্যাকেজমূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
এদিকে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধে এবারের হজ্জে মুজদালিফা, মিনা ও আরাফাতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে সৌদি আরব সরকার। এই নির্দেশ অমান্য করলে বিশাল অঙ্কের জরিমানা গুনতে হবে হাজিদের। খালিজ টাইমস জানায়, গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির বরাত দিয়ে এক সরকারি সূত্র জানায়, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে নেওয়া সতর্কতামূলক ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা অমান্য করলে শাস্তির বিধান অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
ঐ সূত্র আরো বলেছে, আগামী ২৮ জিলকদ (১৯ জুলাই) থেকে জ্বিলহজ্জের ১২ তারিখ (২ আগস্ট) পর্যন্ত অনুমতি ছাড়া নির্দিষ্ট পবিত্র স্থানে (মুজদালিফা, মিনা ও আরাফাত) প্রবেশ করে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে ১০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হবে। দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে শাস্তি হবে দ্বিগুণ।
এছাড়া ইসলামের পবিত্র নিদর্শন কাবাও স্পর্শ করা যাবে না এবারের হজে। নামাজের সময় তো বটেই, কাবা শরিফ তাওয়াফের সময়ও দেড় মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে হাজিদের মধ্যে। এই সময়ে হাজি ও আয়োজকদের প্রত্যেককে সব সময়ের জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।