ডিবিএন ডেস্কঃ “একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাযজ্ঞের নেপথ্যের নায়কদের ষড়যন্ত্র উদঘাটন করে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় মরনোত্তর বিচারের দাবি জানাচ্ছি”-১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর জুরাইন রেলগেট সংলগ্ন চত্বরে কদমতলী থানা আওয়ামীলীগ আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও তবারক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন দাবি তুলে ধরেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব ডঃ মোঃ আওলাদ হোসেন।
কদমতলী থানা আওয়ামীলীগ এর সভাপতি মোহাম্মদ নাছিম মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম, নারকীয়, বর্বরোচিত, লোমহর্ষক ও নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, বাঙালীর রাখাল রাজা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ”
সাবেক সহকারী একান্ত সচিব বলেন, “বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম, নারকীয়, বর্বরোচিত, লোমহর্ষক ও নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ড ঘটে। ঐ কালো রাতে বঙ্গবন্ধু পরিবারের ৮ সদস্যসহ মোট ১৮ জন শাহাদাতবরণ করেন। রচিত হয় পৃথিবীতে বিচারহীনতার এক নির্মম ইতিহাস। শিশু রাসেল থেকে শুরু করে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও নবপরিনতারা এই লোমহর্ষক হত্যার হাত থেকে রেহায় পায়নি। সূচিত হয় বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। বিদেশে থাকায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান জাতির পিতার দুই কন্যা সন্তান শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।”
ডঃ মোঃ আওলাদ হোসেন আরো বলেন, “পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্টের পর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছিলেন, তাদেরকে দেশ ত্যাগের সহায়তা করেছিলেন, তাদের কারণেই এই খুনিরা কূটনৈতিক চাকুরি পেয়েছিল এবং রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ইনডিমিনিটি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে তাদের বিচারের পথ বন্ধ করে রেখেছিলেন। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদও এই খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া অব্যাহত রেখেছিলেন এবং বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে এই খুনিদেরকে কূটনৈতিক চাকুরিতে শুধু পদোন্নতি দিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি, তিনি এদেরকে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করারও চেষ্টা করেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনে এদেরকে সংসদে নিয়ে এসে জাতীয় সংসদের পবিত্রতাও নষ্ট করেছিলেন। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ইতিহাসের কালো আইন ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ‘ বাতিল করে জাতির পিতার খুনের বিচারের পথ উন্মুক্ত করেন। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি পাঁচ আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়। বাকি ছয় জন পলাতক থেকে যায়। ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মাজেদ পরবর্তিতে গ্রেফতার হলে তারও ফাঁসি কার্যকর করা হয়। বাকিরা এখনও পলাতক রয়েছে। প্রকাশ্য খুনিদের বিচার হলেও, এই হত্যা ও ষড়যন্ত্রের নেপথ্যের কুশীলবদের বিচার আজও হয়নি। এমনকি প্রামাণিক সত্যি দিয়ে তাদের দায়ও নিরুপণ করা হয়নি। দেশে সুস্থ রাজনীতির বিকাশের স্বার্থেই তদন্ত কমিশন গঠন করে এই নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যনায়কদের খুঁজে বের করা উচিত। বর্বরোচিত এ হত্যাকাণ্ডে কারা মদদ যুগিয়েছে, এ ষড়যন্ত্রে কার কী ভূমিকা ছিল এসবই উদঘাটন করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করলে ভবিষ্যতে সকল ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা বন্ধ হবে।”
উক্ত মাহফিল ও তবারক বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কদমতলী থানা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা হাজী নুর মুহাম্মদ নুর হোসেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা সলিমুল্লাহ সেলিম, বীরমুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলি মুফতি, ঢাকা জেলা পরিষদ সদস্য আলমগীর হোসেন, ঢাকা মহানগর যুবলীগের সদস্য মোঃ আহসানউল্লাহ, কদমতলী থানা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী কোহিনুর বেগম, শ্যামপুর থানা আওয়ামীলীগ এর দপ্তর সম্পাদক শরীফ মোহাম্মদ শাহজাহান, কদমতলী থানা আওয়ামীলীগ সদস্য শেখ নজরুল ইসলাম, রোখসানা বেগম পারুল, শহীদ মাহমুদ হেমী, বিল্লাল হোসেন স্বপন, কাজী জাহিদ, ৫৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ মহব্বত হোসেন, ৫২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর খান, ৫৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ আরিফ হোসেন, ৫৮ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ফরিদ হোসেন, ৫৩ ওয়ার্ড যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বাহাদুর মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মোঃ হানিফ, ৫২ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি দবিরুল ইসলাম দবীর, ৫৩ নং যুবমহিলাগ সভানেত্রী হাসিনা বেগমসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও অংগ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।