গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ১০০তম দিন আজ। হামাস নির্মূলের নামে নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার সেনারা। এরই মধ্যে গাজায় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা লড়ছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপরও থামার নাম নেই, সর্বশেষ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কণ্ঠেও শোনা গেল, ‘কেউই থামাতে পারবে না আমাদের।’
টানা ১৪ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনিদের উপর নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার রাষ্ট্রটির সেনারা। প্রতি মিনিটেই কোনও না কোনও বোমা ফেলা হচ্ছে গাজার কোনও না কোনও অংশে, যার শিকার হচ্ছে মাতৃগর্ভে থাকা শিশুও। প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছে শতাধিক নিরপরাধ ফিলিস্তিনি। ইতোমধ্যে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা ও অভিযানে গাজায় মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ২৪ হাজারের কাছাকাছি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার শনিবারের প্রতিবেদনে অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া দখলদার বাহিনীর হামলায় অন্তত ২৩ হাজার ৮৪৩ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন গত ৯৯ দিনে।
যাদের ৭০ ভাগই নারী ও শিশু। আর এই সময়ে আহত হয়েছেন ৬০ হাজার ৩১৭ জন। পাশাপাশি নিখোঁজ রয়েছেন কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, বিভিন্ন ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছে তাদের মরদেহ।
গাজার রাফাহ কুয়েতি হাসপাতালের চিকিৎসক সুহাইব আল-হামস সাংবাদিকদের বলেন, এই ১০০ দিন কীভাবে কেটে গেল? গাজাবাসী এই সময়গুলো তিক্ততার সঙ্গে, শহীদদের সঙ্গে, আহতদের নিয়ে সময় পার করেছে।
প্রতিটা মূহুর্ত নিষ্ঠুরতা আর বেদনার। শুধু বাড়িঘরই নয়, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুলেরও ধ্বংস প্রত্যক্ষ করেছি। ইসরায়েল বোমা হামলা করেছে হাসপাতাল, রাস্তা, মেডিকেল দল বা অ্যাম্বুলেন্স সবকিছুর ওপর। তারা কোনোকিছু বাদ দেয়নি।
এমন পরিস্থিতিতেই শনিবার এক টিভি সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘কেউ আমাদের থামাতে পারবে না — দ্য হেগ (আন্তর্জাতিকঅপরাধ আদালত), অ্যাক্সিস অব ইভিল কিংবা অন্য কেউই নয়। বিজয় না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ যাবো। এটা জরুরী এবং আমরা সেটাই করব।’
এমনকি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা শিগগিরই তাদের বাড়িতে ফিরতে পারবেন না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইনে একটি সাধারণ কথা বলা আছে। আর তা হচ্ছে- আপনি কোনও এলাকা থেকে যদি জনসংখ্যাকে সরিয়ে দেন, তাহলে যতক্ষণ পর্যন্ত বিপদ থাকবে ততক্ষণ আপনি তাদেরকে ফিরে আসতে দেবেন না।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম