মো.নাছির উদ্দিন-হোমনা-কুমিল্লা-প্রতিনিধি।
কুমিল্লার হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে দালালদের দৌরাত্ম মোটেও কমেনি। জানাগেছে, স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ মেরীর সরাসরি তদারকিতে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখন সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা পাওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। পাল্টে গেছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও রোগীদের খাবারের মানও। হাসপাতাল চত্বরে দেখা মেলে না প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স। তবে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের দৌরাত্ম ও দালালদের উপস্থিতি ঠিকই আছে।
আজ মঙ্গলবার ১ অক্টোবর সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে সাধারণ রোগী ও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথাবলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
জানাগেছে,কুমিল্লা-২(হোমনা-তিতাস) আসনের সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ মেরী প্রথম স্বাস্থ্য সপ্তাহ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছিলেন হাসপাতালে কোনো দালাল ঢুকতে পারবে না, হাসপাতাল চত্বরে কোনো বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স অবস্থান করতে পারবে না।
স্বাস্থ্য সেবার মান নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।
সরেজমিনে দেখা বহির্বিভাগে চিকিসৎসা নিতে আসা রোগীরা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করতে হচ্ছে। কিন্ত এর ফাঁকে ঢুকে পড়ছে দালাল চক্র। গ্রামগঞ্জ থেকে আসা সাধারণ রোগীদের কেউ কেউ তাদের খপ্পরে পড়ে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আবার প্রচণ্ড ভিড়ের সুযোগে কেউ কেউ চিকিৎসকের দোহাই দিয়ে টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন কয়েকজন রোগী।প্রতিনিধিকে কয়েকজন রোগী বলেন, এখন আগের তুলনায় সেবার মান খুবই ভাল, হাসপাতাল থেকে অনেক ঔষধ দিচ্ছে।
উপজেলার চিৎপুর গ্রামের ছেনোয়ারা বেগম জানান,আজ আমার ছোট ছেলের বউকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। ডা. শহিদ উল্লাহ এর চিকিৎসা করেছেন। হাসপাতালে রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা করে হাসপাতাল থেকেই ঔষধ দিয়ে দিয়েছে।
এদিকে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মোঃ শহিদ উল্লাহ জানান,মাননীয় এমপি মহোদয়ের আন্তরিক তৎপরতায় হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মান বেড়েছে। তবে যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসক সংকট রয়েছে। আগের তুলনায় বর্তমানে রোগী বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। হাসপাতালে এক্স-রে মেশিন বিকল থাকায় সেবা কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।তবে ইসিজি,ব্লাড, স্টোল,ইউরিন পরীক্ষা নিয়মিত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন শুরু হয়েছে। বাকি আপারেশন চালুর বিষয়ে এমপির আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। সদ্য যোগদানকৃত উপজেলার স্বাস্থ্য ও পঃপ কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সালাম সিকদার
বলেন, হাসপাতালের জন্য সরকার যে ওষুধ বরাদ্দ দিয়েছে, তা দিয়ে সব রোগীকে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ অবস্থায় ওষুধের বরাদ্দ বাড়ানো খুবই জরুরি। হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন নেই। এক্স-রে মেশিনটি কয়েক বছর যাবত বিকল মেরামতের জন্য কয়েকবার লেখালেখি হয়েছে, কিন্তু এখনো কোনো ফলাফল হয়নি। দ্রুত হাসপাতালে এক্স-রে মেশিন মেরামত ও নতুন আল্ট্রাসোনোগ্রাম মেশিনের খুবই প্রয়োজন। দালালের দৌরাত্ম ও প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে ডা. মো: আব্দুস সালাম সিকদার বলেন, এ হাসপাতালে একটি দালাল চক্র রোগীদের বাইরে নিয়ে যায় এমন অভিযোগ আছে। এসব ঠেকাতে স্থানীয় সচেতন মানুষদের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। মাঝে মধ্যে স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিরা হাসপাতাল পরিদর্শন করে আমাদের পরামর্শ দিলে আমরা যারা ডাক্তার রয়েছি তারা নিরাপদ অনুভব করি।
তিনি বলেন, হাসপাতালের সেবার মান বাড়ায় আগের তুলনায় বহির্বিভাগ ও ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। কুমিল্লা-২( হোমনা-তিতাস)আসনের সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ মেরীর তদারকি ও পরামর্শের ফলে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে।