রাজধানী আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুল করিম শিপনকে মারধর করে হত্যার অভিযোগে হাসপাতালের ব্যবস্থাপকসহ ১০জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে শেরে-বাংলা নগর থানা পুলিশ। সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিমের মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
আজ মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর আদাবর থানায় মামলাটি করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদাবর থানার (ইন্সপেক্টর অপারেশন) মো. ফারুক মোল্লা জানান, মঙ্গলবার ভোরে নিহতের বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছে। এই মামলায় অনেককে আসামি করা হয়েছে। এ বিষয়ে দুপুরের দিকে তেজগাঁও ডিভিশনের ডিসি সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানাবেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, পারিবারিক ঝামেলার কারণে আনিসুল মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সোমবার (০৯ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আনিসুলকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালটিতে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই কর্মচারীদের ধাস্তধস্তি ও মারধরে তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন পরিবার।
এদিকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, সোমবার বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিমকে টানাহেঁচড়া করে একটি কক্ষে ঢোকানো হয়। তাকে হাসপাতালের ছয়জন কর্মচারী মিলে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। এরপর নীল পোশাক পরা আরও দুজন কর্মচারী তার পা চেপে ধরেন। এসময় মাথার দিকে থাকা দুজন কর্মচারী হাতের কনুই দিয়ে তাকে আঘাত করছিলেন। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। একটি নীল কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুলের হাত পেছনে বাঁধা হয়। চার মিনিট পর আনিসুলকে যখন উপুড় করা হয়, তখনই তার শরীর নিস্তেজ ছিল। একজন কর্মচারী তখন তার মুখে পানি ছিটান। তাতেও আনিসুল করিম নড়াচড়া করছিলেন না। তখন কর্মচারীরা কক্ষের মেঝে পরিষ্কার করেন। সাত মিনিট পর সাদা অ্যাপ্রোন পরা একজন নারী কক্ষে প্রবেশ করেন। ১১ মিনিটের মাথায় কক্ষের দরজা লাগিয়ে দেয়া হয়। ১৩ মিনিটের মাথায় তার বুকে পাম্প করেন, সাদা অ্যাপ্রোন পরা নারী।
প্রসঙ্গত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র আনিসুল করিম ৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। সর্বশেষ বরিশাল মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন তিনি। পারিবারিক জটিলতায় কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন।
আজ মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরে তার নিজ বাসভবনে আনিসুল করিমকে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।