বঙ্গোপসাগর সৃষ্ট নিম্মচাপ ‘ফণী’র আয়তন ২ লক্ষাধিক বর্গকিলোমিটার। আর বাংলাদেশেরর ভৌগলিক আয়তন ১৪৭৫৭০ বর্গকিলোমিটার। বাংলাদেশের ভৌগলিক আয়তনের চেয়ে অনেক বেশী বড় এই নিম্নচাপটি শনিবার দিবাগত ভোর রাত থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সমগ্র বাংলাদেশ উপকূলে তীব্রভাবে আঘাত হানতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানলে বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ১৬০ কি:মি: থেকে সর্বোচ্চ ২৩০ কি:মি: পর্যন্ত উঠতে পারে। বর্তমানে নিম্মচাপটির মুখ অধিকাংশই পুরো বাংলাদেশ উপকূলের দিকে এবং আংশিক ভারতের সমুদ্র উপকূলের দিকে। এই নিম্মচাপটি গত তিনদিন যাবৎ এক স্থানে স্থির থেকে শক্তি সন্ঞ্চয় করছে। এটি ধীরে ধীরে হ্যারিকেনে রূপ নিচ্ছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্মচাপটি মঙ্গলবার সকাল ৯ টায় কক্সবাজার উপকূল থেকে ১৪৬০ কি:মি:, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ১৫৩০ কি:মি:, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১৪৮০ কি:মি: এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১৪৫০ কি:মি: দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে। সারাদেশের আবহাওয়া অফিসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে নিজ নিজ কর্মস্থলে ত্যাগ নাকরার জন্য আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক গত ২৯ এপ্রিল জরুরী চিঠি ইস্যু করেছেন।
একই চিঠিতে আবাহাওয়া অধিদপ্তরের ছুটিতে থাকা সকল স্টাফদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। তাদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয়েছে। নিম্মচাপের কারণে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত প্রচন্ড তাপদাহ অব্যাহত থাকবে।
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে সাতক্ষীরায় চার নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছিল যা নামিয়ে সাত নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত জারি করা হয়েছে। আসন্ন এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সাতক্ষীরা জেলা ও শ্যামনগর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগাম প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
সেই সঙ্গে সাতক্ষীরায় চার নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে সাত নম্বর সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। বুধবার রাতে এ সতর্কতা জারি করা হয়।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন, সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র কারণে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছিল সেটা নামিয়ে এখন ৭নং হুঁশিয়ারি সংকেত জারি করা হয়েছে। এটি এখন ভারতের ওড়িশায় অবস্থান করছে। এর ফলে বাংলাদেশে ভারী বৃষ্টি শুরু হতে পারে।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রম না করা পর্যন্ত সব সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল ঘোষণা করে স্ব স্ব কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে।