সুপার সাইক্লোনে রূপ নেওয়া ‘আমফান ’ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসায় বুধবার (২০ মে) সকাল ৬টা থেকে মহাবিপদ সংকেত জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান।
তিনি বলেন, আজ রাতের মধ্যে উপকূলের লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হবে।
ঘূর্ণিঝড়ের সর্বশেষ অবস্থান ও সরকারের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে মঙ্গলবার (১৯ মে) বিকেলে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। এর আগে একই বিষয় নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় মন্ত্রী বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ১২ হাজার ৭৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এখানে ৫১ লাখ ৯০ হাজার মানুষ থাকতে পারবে। তবে সেখানে আমরা ২০ থেকে ২২ লাখ মানুষকে সরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। কোন জেলায় কতজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে তার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। রাত ৮টার মধ্যে সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা সম্ভব হবে।
এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তর তাদের সর্বশেষ বুলেটিনে জানিয়েছে এটি আজ বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮৫ কি.মি.দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪০ কি.মি.দক্ষিণপশ্চিমে, মংলাসমুদ্রবন্দর থেকে ৬৭০ কি.মি.দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৬৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আম্পান খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে ২০শে মে ২০২০ বিকাল/সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে ।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ২০০ কি.মি. যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান বলেন, আমাদের টার্গেট হলো উপকূলবাসী যারা ঝুঁকিপূর্ণ ঘরবাড়িতে অবস্থান করছেন তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা। সোমবার (১৮ মে) থেকে এ কাজ শুরু হয়েছে। রাতের মধ্যে উপকূলবাসীদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। মহাবিপদ সংকেত দেখানোর পর আর লোকজনকে বাড়িঘর থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার কোনো সুযোগ থাকবে না। ঘূর্ণিঝড়টি বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানবে এবং বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ওপর দিয়ে অতিক্রম করবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মাঠে থাকতে প্রযোজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঝড় পরবর্তী দ্রুত ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সব মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।