নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সিলেটে আজ থেকে টানা ৩ দিনের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। টানা তিনদিনের পরিবহন ধর্মঘটে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বন্ধ থাকা কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের দাবিতে পুরো বিভাগে এই ধর্মঘট ডেকেছে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ।
আজ মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল থেকে টানা তিনদিন বন্ধ থাকবে সব ধরনের পণ্য ও যাত্রীবাহী পরিবহন। এতে ঐক্যমত প্রকাশ করেছে পরিবহন মালিক শ্রমিকদের অন্যান্য সংগঠনও।
এদিকে গতকাল সোমবার (২২ ডিসেম্বর) পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে বিকেলে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদের নেতাদের সাথে বৈঠক করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম। বৈঠকে জেলা প্রশাসক ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানালেও পরিবহন নেতারা তা মানেনি।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, আমি তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু পরিবহন নেতারা তা মানেননি।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পরিবেশের বিপর্যয় ঠেকাতে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিলেটের জাফলং, ভোলাগঞ্জ, শাহ আরেফিন টিলা, বিছনাকান্দি ও লোভছড়া এই পাঁচ কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ করে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এর আগে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বেলা) এর দায়ের করা একটি রিটের প্রেক্ষিতে সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলোতে সব ধরনের যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে উচ্চ আদালত।সরকারের নিষেধাজ্ঞার পর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে আন্দোলন করে আসছেন পাথর ব্যবসায়ীরা। এবার তাদের সাথে যুক্ত হয়েছেন পরিবহন ব্যবসায়ীরা। একাধিক বিক্ষোভ সমাবেশ করার পর মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার টানা ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছেন তারা।
ফলে মঙ্গলবার থেকে সিলেটে যাত্রী ও পণ্যবাহী সব ধরনের পরিবহন বন্ধ থাকবে। সিলেট থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যাবে না। সিলেটে কোনো বাস প্রবেশও করবে না।
অন্যদিকে প্রশাসন সূত্র জানায়, সরকার ভেবে দেখেছে দেশের চাহিদার সিংহভাগ পাথর আমদানি করে আনা হয়। পাথর কোয়ারিগুলো থেকে চাহিদার মাত্র ৭ থেকে ৮ ভাগ পাথর উত্তোলন ও সরবরাহ করা হয়। বিনিময়ে বোমা মেশিনসহ নানান ক্ষতিকর যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে ধূসর করে ধ্বংস করা হয় সবুজ প্রকৃতি। যার ফলে পর্যটন এলাকায় ঘুরতে আসা মানুষজনকে পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। অনেকেই ধূলিকণার বিরূপ প্রভাবে চোখের বিভিন্ন রোগ ব্যাধিতে ভোগেন।
এছাড়া যান্ত্রিক শব্দে নৈসর্গিক পরিবেশ বিঘ্নিত হয়। তাই সরকার প্রকৃতি রক্ষায় পর্যটনশিল্পকে উৎসাহিত করে সেখান থেকে রাজস্ব আয়ের অর্থ দিয়েই পাথর আমদানি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষায় সরকারের নেওয়া এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে পর্যটনপ্রেমী ভ্রমণপিপাসুরা।