মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের সার্ভার হ্যাক হয়ে রোহিঙ্গা নিবন্ধন করেছে দূর্বৃত্তরা। এ পর্যন্ত কয়েক’শ রোহিঙ্গা নিবন্ধন হয়েছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তবে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, বিগত ২০ দিনের তথ্য যাচাইয়ের পর ১৫৩টি ভুয়া নিবন্ধনের তথ্য তারা পেয়েছেন। এ ব্যাপারে রাজনগর থানায় সাধারণ ডায়রি করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান নকুল দাস।
ইউনিয়ন ও উপজেলা নির্বাহি অফিসারের কার্যালয় সূত্রের বরাতে জানা যায়, গত চলতি মাসের ১৮ সেপ্টেম্বর শরিয়তপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে আসিয়া বিবি (২৭) নামে একজন রোহিঙ্গা নারী পাসপোর্ট করতে গিয়ে সন্দেহ হলে কর্তৃপক্ষের হাতে আটক হন। তার আইডি কার্ড না থাকায় জন্মনিবন্ধন দিয়ে পাসপোর্ট করতে যান তিনি। আসিয়া আক্তার যে নিবন্ধন দিয়ে পাসপোর্ট করতে গিয়েছিলেন সেটি রাজনগর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়ন থেকে নিবন্ধিত করা হয়েছিল। যা গত ৯ সেপ্টেম্বর ইউনিয়ন কার্যালয় থেকে নিবন্ধিত হয়েছে। আটক ওই নারী কক্সবাজারের টেকনাফ থানার আলী যোহার ও আম্বিয়া খাতুন দম্পতির মেয়ে বলে পুলিশকে জানিয়েছে।
বিষয়টি যাচাই করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা আক্তার মিতার কাছে পাঠালে ইউএনও ফতেহপুর ইউনিয়নের সচিব পাপড়ি দত্তকে কার্যালয়ে তলব করেন। ইউনিয়ন সচিবের আইডি থেকে লগইন করতে সমস্যা হওয়ায় বুঝতে পারা যায় আইডি হ্যাক হয়েছে। পরে আইডি নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়।
এ ব্যাপারে ফতেহপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাস রাজনগর রাজনগর থানায় সাধারণ ডায়রি (নং ৯৭৪) করেছেন।
এদিকে এ পর্যন্ত কতটি জন্ম নিবন্ধন কার্ড নিবন্ধিত হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত করে জানা যায়নি। কঠোর নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও আইডি কিভাবে হ্যাক হলো এনিয়েও দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা।
ফতেহপুর ইউনিয়নের সচিব পাঁপড়ি দত্ত বলেন, গত দুই মাস থেকেই সার্ভারে সমস্যা করছে। কিন্তু এটি হ্যাক হয়েছে কি না তা আমারা বুঝতে পারিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমাদেরকে তার কার্যালয়ে ডেকে নেয়ার পর আমরা বুঝতে পারি এটি হ্যাক হয়েছে। এখন আইডি নিস্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে।
ফতেহপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাস বলেন, সার্ভার হ্যাক হয়ে ভুয়া নিবন্ধন করা হয়েছে। এসব নিবদ্ধনে আমাদের স্বাক্ষর নেই। আমরা যাচাই করেছি। এ পর্যন্ত ১৫৩টি ভুয়া নিবদ্ধন পাওয়া গেছে। তবে কবে থেকে হ্যাক হয়েছে বলতে পারছিনা। এব্যাপারে আমি রাজনগর থানায় জিডি করেছি।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহি অফিসার ফারজানা আক্তার মিতা বলেন, ইউনিয়ন অফিসের সার্ভার হ্যাক হয়ে কয়েকটি ভুয়া নিবন্ধন হয়েছে। এগুলো রোহিঙ্গা কি না বলতে পারছি না। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি নিবন্ধন যাচাইয়ের সুযোগ আসায় বিষয়টি বুঝতে পারা যায়। ইউনিয়ন থেকে যে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হবে।
*** আজ ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ৮:৩২ | শুক্রবার ***
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি