সর্বকালের উষ্ণতম বছরের প্রথম পাঁচের মধ্যে চলতি ২০২৩ সাল ঢুকে পড়তে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ইতোমধ্যে প্রায় ২৫০ বছর মধ্যে জুলাই মাসকে উষ্ণতম মাস হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সামনের বছরে আরও বেশি গরম পড়বে। এ অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সতর্ক করল বিশেষজ্ঞরা।
মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার গোদার্ড ইনস্টিটিউট অব স্পেস স্টাডিজ জানিয়েছে, চলতি বছরের জুলাই মাসে যে গরম পড়েছে তা সবশেষ ১৮৮০ সালে পড়েছিল। এছাড়া ১৯৫১ সাল থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে জুলাইয়ের গড় তাপমাত্রা বিবেচনা করলে ২০২৩ সালের সপ্তম মাসে গরম বেশি ছিল ১ দশমিক ১৮ ডিগ্রি (গড় তাপমাত্রার থেকে)।
নাসার গোদার্ড ইনস্টিটিউট অব স্পেস স্টাডিজের প্রধান বিজ্ঞানী আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, ২০২৩ সালটা একটা ট্রেলার ছিল। ‘এল নিনো’র প্রভাবে ২০২৪ সালে গরম আরও বাড়তে পারে। এর ফলে, বছরটি পৃথিবীর সব থেকে উষ্ণতম বছর হতে পারে।
এল নিনো হচ্ছে সমুদ্রের উপরিভাগের জলের তাপমাত্রার গড় মানের সাথে তুলনামুলক নীরবিচ্ছিন্ন পরিবর্তন। আরও সুনির্দিষ্ট ভাবে বলতে গেলে, পূর্ব-কেন্দ্রীয় গ্রীষ্মমন্ডলীয় শান্ত সমুদ্রের পানির গড়পড়তা তাপমাত্রা যখন কমপক্ষে ০.৫°সেলসিয়াস (০.৯°ফারেনহাইট) হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে তখন। যখন এটি পাঁচ মাসের কম সময় ধরে সংঘটিত হয়, তখন এ্টি এল নিনো অথবা লা নিনোর শর্ত পূরণ করে, যদি এই ব্যতিক্রম পাঁচ মাস বা তারও অধিক সময় ধরে চলতে থাকে তখন এটিকে এল নিনো অথবা লা নিনো নামে অভিহিত করা হয়। সাধারণত এটি ২-৭ বছরের যে কোন সময়ে এবং ৯ মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত চলতে পারে। এল নিনোর প্রথম লক্ষণগুলো হচ্ছে:
- ভারত মহাসাগর, ইন্দোনেশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার উপরিভাগের জলের চাপের পরিবর্তন,
- তাহিতি এবং বাকি মধ্য-পূর্ব শান্ত সমুদ্রের বায়ুচাপের হ্রাস,
- বিষুবরেখা বরাবর বাণিজ্যিক বায়ু যখন উত্তর শান্ত সমুদ্রে গিয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে অথবা পুর্বে চলতে থাকে,
- পেরুতে গরম বাতাসের উদয় হয় এবং উত্তর পেরুভিয়ান মরুভূমিতে বৃষ্টির সূত্রপাত ঘটায়,
- দক্ষিণ এবং ভারতীয় সমুদ্র থেকে উত্তর শান্ত সমুদ্রে উষ্ণ জলের বিস্তার ঘটে। এটি বৃষ্টির জল সাথে নিয়ে চলে এবং দক্ষিণ শান্ত সমুদ্রে অনাবৃষ্টি আর সাধারণত শুষ্ক উত্তর শান্ত সমুদ্রে বৃষ্টিপাত ঘটায়।
আরো সহজবভাবে বলতে গেলে ‘এল নিনো’ হচ্ছে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি একটি জলবায়ুর ধরন, যার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে খাদ্য, সুপেয় পানি এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার ঝুঁকি বৃদ্ধি পাবে।
নাসার প্রশাসক বিল নেলসন বলছেন, স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে বিশ্বে গরম বাড়ছে। প্রকৃতি আমাদের সতর্কবার্তা পাঠাচ্ছে। আমাদের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারন করতে পারে।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস, উইকিপিডিয়া।
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি