বাংলাদেশ এখন দক্ষিনপুর্ব এশিয়ার গুরত্বপুর্ন রাষ্ট্র। বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রেরও নজর এখন বাংলাদেশের দিকে। এই দৃষ্টি বন্ধুত্বের চেয়ে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টাই বেশী। “তলা বিহীন ঝুড়ি” আখ্যা দিয়ে যারা বাংলাদেশকে বিদ্রুপ করেছে তারাই এখন অর্থ লগ্নি করতে চায় বাংলাদেশে। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কটি ওয়াশিংটন মেনে নিতে পারছেনা। রাশিয়া এবং ভারত বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র। স্বাধীনতা যুদ্ধে এই দুই দেশের সহযোগিতা বাঙালী ভুলেনি। দেশের স্বার্থরক্ষায় ভারতের সাথে অনেক বিষয়েই বিরোধ রয়েছে তবে, ভারত বাংলাদেশের জন্য গুরত্বপুর্ন প্রতিবেশী। ভৌগলিক এবং ঐতিহাসিক ভাবেও দুই দেশের কৃষ্টি এবং সংস্কৃতিতে মিল রয়েছে। দুই দেশের বানিজ্য টাকার অঙ্কে এখন সুবিশাল। তাই ভারত বড় দেশ হিসাবে বাংলাদেশকে নেপাল ভুটানের মত নিয়ন্ত্রন করতে চায়। বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করায় ভারতও অখুশী। চীনের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক না থাকায় চাপটি আরও বেশী।
বাংলাদেশে চীন বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থায়ন করায় ভয়টি এখন ওয়াশিংটনেরও। এশিয়ায় চীনের অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রন নিয়ে বাইডেন প্রশাসন স্নায়ুর চাপে ভুগছে। প্রথমে গনতন্ত্রের দাবী করলেও এখন অর্থ লগ্নির লোভনীয় প্রস্তাব দিচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধে ওয়াশিংটনের বিদেশ নীতি চাপের মূখে। যূদ্ধ বাধিয়ে অস্র বিক্রির নীতিটি মূখ থুবরে পরেছে। এমরান খান মস্কোর প্রতি সমর্থন দেওয়ায় ৫ দিনের মধ্যে পাকিস্তানের সরকার পাল্টে দিয়েছে ওয়াশিংটন। কিন্তু ভারত ওয়াশিংটনের প্রেস্ক্রিপশন চীনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিবেনা। এখন বাংলাদেশ চীনের দিকে ঝুকে পরলে এশিয়াতে আমেরিকান নীতি দুর্বল হয়ে পরবে। জন বহুল ভারত চীন এবং বাংলাদেশ আমেরিকার বানিজ্যক বাজারেও আঘাত করতে পারে। এমন সঙ্কাতেই হাসিনা সরকারের উপর ওয়াশিংটন চাপ সৃষ্টি করতে চায়। শিল্পোন্নত বাংলাদেশ নীতিতে চীনের অর্থায়ন আমেরিকার পছন্দ নয়। চীন এবং রাশিয়া উদ্যোগ নিলে এশিয়াতে আমেরিকার কর্তৃত্ব হারাবে। মায়ানমারেও চীন এবং রাশিয়া ঢুকে পরেছে আগেই। আমেরিকা এখন বাংলাদেশকে বেকায়দায় ফেলতে চায়। প্রচারনা চালাচ্ছে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার ভাগ্য বরন করতে চলেছে। শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক পরিনতির মূল হোতা কে এখনো খোলসা হয়নি তবে, আধিপত্য প্রতিষ্ঠার কুটচালে শ্রীলঙ্কা বিপর্যস্থ্য তা না ভেবেই বলা যায়। এই সতর্কতা ভারতীয় গনমাধ্যমেও গুরত্ব দিয়ে প্রচার করছে।
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কটি ভারতের জন্যও গাত্রদাহ। তাই আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের বিরোধী শিবিরে বিষয়টি ব্যপক চর্চা চলছে। ওয়াশিংটনের মদদপুষ্ট জ্ঞানপাপি এবং অচল নেতারা এই ইস্যুকে সম্বল করে মাঠে নেমবে। আতঙ্ক ছড়িয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলবে এই নেতারা। কিন্তু বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার ভাগ্য বরন করবেনা মূলত দুই কারনে (১) কৃষি নির্ভর বাজেট প্রনয়ন করে বাংলদেশ কৃষি উৎপাদনে স্বনির্ভর হয়েগেছে। ৭৪ এর মত আমদানী বিলম্বিত করে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করা সম্ভব হবেনা (২) দেশের বৈদেশীক মুদ্রার রিজার্ভ সব ঋন পরিশোধ করতে সক্ষম। এবং ওয়াশিংটনের তাবেদার সরকার প্রতিহত করতে শেখ হাসিনা একাই যথেষ্ঠ। কিন্তু প্রচারনাটি শুরু হয়েগেছে। দেশের অভ্যান্তরে এবং বিদেশে দুর্ভিক্ষের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা ব্যপকতা শুরু হয়েগেছে। সরকারের প্রতিটি সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ঠ কর্তাব্যক্তিদের উচিৎ হবে এখন থেকেই প্রচারনার বিরুদ্ধে জনগনকে অবহিত করা। বি এন পি সহ স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি আমেরিকার রিপোর্ট নিয়ে ঈদের পর থেকেই প্রচারনায় নামবে। পাকিস্তানের মত বাংলাদেশেও ওয়াশিংটনের অর্থপুষ্ট দালালের সংখ্যাটি কম নয়।
আজিজুর রহমান প্রিন্স, কলামিস্ট ও আওয়ামীলীগ নেতা, টরন্টো, কানাডা।