দেখতে দেখতে কেটে গেল নন্দিত অভিনেতা আলী যাকের বিহীন তিন বছর। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক, প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ২০২০ সালের আজকের দিনে মারা যান।
১৯৪৪ সালের ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের রতনপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন আলী যাকের। ১৯৬০ সালে সেন্ট গ্রেগরি থেকে ম্যাট্রিক পাস করে নটরডেমে ভর্তি হন আলী যাকের। সেখান থেকে এইচএসসি পাস করেন তিনি। এরপর সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক করেন। অনার্স পড়াকালেই ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দেন। ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। অনার্স শেষ হওয়ার পর অর্থাৎ ১৯৬৭ সালে চলে যান করাচি। সেখানেই প্রথম অভিনয় করেন আলী যাকের। ১৯৬৯ সালে ঢাকায় ফিরেন আসেন।
১৯৭২ সালের ২১ফেব্রুয়ারি তিনি প্রথম মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেন। মুনীর চৌধুরীর বিখ্যাত ‘কবর’ নাটকটিতে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়। তিনি দেশ জোড়া খ্যাতি পেয়েছেন টিভি নাটকের জন্য।
১৯৭২ সালের জুন মাসের দিকে আতাউর রহমান ও জিয়া হায়দারের আহ্বানে নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ে যোগ দেন তিনি। ওই দলে আতাউর রহমানের নির্দেশনায় বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন, যার প্রথম মঞ্চায়ন হয়েছিল ওয়াপদা মিলনায়তনে।
১৯৭৩ সালে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে তিনি প্রথম নির্দেশনা দেন ‘বাকি ইতিহাস’ নাটকে, যা ছিল বাংলাদেশে প্রথম দর্শনীর বিনিময়ে নাট্য প্রদর্শনীর যাত্রা।।
সৎ মানুষের খোঁজে,দেওয়ান গাজীর কিস্সা, গ্যালিলিও, ম্যাকবেথসহ অনেক আলোচিত মঞ্চনাটকে অভিনয় ও নির্দেশনা দেন আলী যাকের। দেশের ইতিহাসে অন্যতম দুটি বিখ্যাত ও কালজয়ী নাটক ‘বহুব্রীহি’ ও ‘আজ রবিবার’-এ অভিনয় করেছেন তিনি।
‘বহুব্রীহি’ নাটকে তাঁর মামা চরিত্র এবং ‘আজ রবিবার’-এ বড় চাচা চরিত্র দুটি তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। যার ফলে দর্শকদের কাছে তিনি এখনও বড় চাচা নামেও পরিচিত। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদকসহ আরও অনেক সম্মাননা।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম