তিমির বনিক, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি: আসন্ন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পৌর নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কর্মী-সমর্থকদের ভোটকেন্দ্র দখলে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান।
গত বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে পানসি রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মহসিন মিয়া বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বি নৌকা মার্কার প্রার্থীর অব্যাহত আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মহসিন মিয়া লিখিত বক্তব্যে বলেন, প্রতিপক্ষের সমর্থকরা শত শত মোটরসাইকেল নিয়ে আমার বাসার সামনে মহড়া দিয়ে, পটকা ফাটিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। প্রকাশ্যে মিছিল করে আমার পিঠের চামড়া তুলে নেয়ার শ্লোগান দিচ্ছে- এতে ভোটারদের মনে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করছে। সাধারণ ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন এমন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহবান জানান তিনি।
সর্বশেষ গত ২৩ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে কেন্দ্রে এজেন্ট নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র ফটোকপি করতে গেলে পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক নৌকা প্রতীকের কর্মীরা আমার ২ কর্মীকে গুহ রোডের নৌকার নির্বাচনী অফিসে নিয়ে মারধর করে। ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক টাকা বিতরণ করার মিথ্যা স্বীকারোক্তি নিয়ে ফেসবুকে প্রচার করে। পরে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে। এরপর ছাত্রলীগ কর্মীরা কোর্ট রোডে আমার সমর্থক অসুস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জাহাঙ্গির হোসেন এর বাসায় হামলা করে।
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, আপনারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছেন মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান নৌকার সমর্থনে প্রচারণায় অংশ নিয়ে কিভাবে ‘ভোটকেন্দ্র দখলে নিতে কর্মী-সমর্থকদের প্রকাশ্যে নির্দেশ’ দিচ্ছেন। এক ভিডিও ফুটেজ কদিন থেকে ভাইরাল হয়েছে মিছবাহুর রহমানের,প্রকাশ্যে হুকুম করছেন ভোট কেন্দ্র দখল করা নিয়ে।
এসব বিষয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছি না। আমার বাসার সামনে ডাকবাংলো সরকারি রেস্ট হাউস, সরকারি যানবাহন নির্বাচনী কাজে ব্যবহার করছেন নৌকার প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা।
এ ব্যাপারে নৌকা মার্কার প্রার্থী অধ্যক্ষ সৈয়দ মনসুরুল হক এ অভিযোগ মিথ্যা বলে জানান। আওয়ামী লীগ সমর্থিত মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, বিয়ানিবাজার পৌরসভার বহিরাগত মেয়রগণ সরকারি যানবাহনে নৌকা প্রতীকের স্টিকার লাগিয়ে পদ-পদবী ব্যবহার করে শ্রীমঙ্গল এসে বিভিন্ন ভাবে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। যা নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হলেও কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না।
অন্যদিকে, আমার সমর্থক শ্রমিক সংগঠনের পক্ষে মিছিল করলে তাদের জরিমানা করা হয়। আমার ছেলের ব্যক্তিগত কারে স্টিকার লাগানোর কারণে জরিমানা করা হয়েছে। এসব বিষয়ে আমি ৫ দফায় জেলা নির্বাচন অফিসারকে লিখিত এবং পুলিশ সুপার, উপজেলা প্রশাসন ও শ্রীমঙ্গল থানার পুলিশকে মৌখিক অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। এতে করে আগামী ২৮ নভেম্বর নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে আমি সন্দিহান। এজন্য নির্বাচন কমিশন সহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।