নিজের করা আঠারোতম ওভারের তৃতীয় বলে মিঠুনকে তৃতীয় বারের মতো লাইফ দেন আলিস ইসলাম। তবে আর না! পরের বলেই মিঠুনকে বোল্ড করে শুরু। পঞ্চম বলে অধিনায়ক মাশরাফিকে বোল্ড, আর ওভারের শেষ বলে ফরহাদ রেজাকে সাকিব আল হাসানের ক্যাচে পরিণত করে হ্যাট্রিক পূরণ করেন আলিস ইসলাম। আর এখানে ধসে গেল রংপুরের জয়ের স্বপ্ন। শেষ ওভারে যেখানে দরকার ছিল ১৪ রান সেখানে প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত দলকে জয় এনে দিতে পারেননি শফিউল ইসলাম। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ২ রানের জয় তুলে নিয়েছে ঢাকা।
শেষ পাঁচ ওভারে জয়ের জন্য রংপুরের দরকার ছিল ৩০ রান। মোহাম্মদ মিঠুনের সহজ দু’টি ক্যাচ ছেড়ে দেয়া আলিস আলিকে বোলিং অ্যাটাকে নিয়ে আসেন অধিনায়ক সাকিব। বিস্ফোরক রাইলি রুশোকে তুলে নিয়ে দলে স্বস্তি ফেরান। এর আগে বড় টার্গেটে খেলতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় রংপুর। দলের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন ক্রিস গেইল ফিরে যান মাত্র ৮ রানে। আন্দ্রে রাসেল এবং কাইরন পোলার্ড যুগলবন্দিতে ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্যাচ তুলে নিয়ে গেইলকে ফেরান। মেহেদী মারুফও ব্যর্থ। তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১০ রান। তবে গেইলের অভাবটা একোবরেই বুঝতে দেননি রাইলি রুশো। সাকিব, নারিন রাসেলদের কচুকাটা করে দলকে লড়াইয়ে ফেরান তিনি। বারবার লাইফ পেয়ে পিচে থিতু হওয়া মোহাম্মদ মিঠুন কার্যকরীভাবেই তাকে সঙ্গ দিয়ে যান। অবশেষে ষোলতম ওভারে দলীয় ১৪৬ রানের সময় রুশো ঝড় থামান আলিস আলী। মাত্র ৪৪ বলে ৮ বাউন্ডারি আর ৪ ওভার বাউন্ডারিতে তিনি করেন ৮৩ রান। তবে তার আগে দলকে তুলনামূলক সহজ সমীকরণে রেখে যান রুশো।
এরপর ৩ রানে রবি বোপারা ফিরে গেলে নতুন করে চাপে পড়ে রংপুর। কিছুদূর গিয়ে মিঠুনও বিদায় নেন অর্ধশতক থেকে মাত্র ১ রানের আক্ষেপ নিয়ে। অধিনায়ক মাশরাফি মাঠে নেমেই বোল্ড হন। ১৪৬ রানে যেখানে ছিল ২ উইকেট সেখানে ১৬১ রানে রংপুরের স্কোর দাঁড়ায় ১৬১ রানে ৭ উইকেট।
এরআগে রংপুর রাইডার্সের সামনে বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় ঢাকা ডায়নামাইটস। কাইরন পোলার্ড, সাকিব আল হাসান এবং আন্দ্রে রাসেলের ঝড়ে ৯ উইকেটে ১৮৩ রান করেছে ঢাকা।
মিরপুরে টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন রংপুর দলপতি মাশরাফি বিন মুর্তজা। সোহাগ গাজী এবং অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার বোলিংয়ে শুরুতে চাপে পড়েছে ডায়নামাইটসরা। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে ফর্মের তুঙ্গে থাকা হজরতুল্লাহ জাজাইকে বোল্ড করেন সোহাগ গাজী। দলীয় ১৯ রানে আরেক ওপেনার সুনীল নারিনকে ফেরান মাশরাফি। রোবি বোপারার হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে তিনি করেন ৮ রান। পরের ওভারেই রনি তালুকদারকে ফেরান সোহাগ গাজী।
এরপর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। হিসেবে ব্যাটিংয়ে উইকেট ধরে রাখেন তিনি। তবে অপরপ্রান্ত থেকে কাইরন পোলার্ড ঝড় তুলে রানের চাকা সচল রাখেন। মাত্র ২১ বলে অর্ধশতক তুলে নেয়া পোলার্ড থামেম ৬২ রানে। তাকে ফেরান বিনি হাওয়েল। এরপর সাকিবও ফিরে যান ৩৬ রানে। তবে শেষ দিকে ১৩ বলে ২৩ রান করে দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন আন্দ্রে রাসেল। তবে শেষ দিকে রান তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন শুভাগত হোম, নুরুল হাসান সোহানরা।
ঢাকা ডায়নামাইটস: ১৮৩/৯
হজরতুল্লাহ জাজাই ১ (৩)
সুনীল নারিন ৮ (৯)
রনি তালুকদার ১৮ (৮)
সাকিব আল হাসান ৩৬ (৩৭)
মিজানুর রহমান ১৫ (১২)
কাইরন পোলার্ড ৬২ (২৬)
আন্দ্রে রাসেল ২৩ (১৩)
শুভাগত হোম ৩ (৮)
নুরুল হাসান ৪ (৩)
রুবেল হোসেন ১* (১)বোলার:
মাশরাফি বিন মুর্তজা (৪-০-২২-১)
সোহাগ গাজী (৩-০-২৮-২)
শফিউল ইসলাম (৪-০-৩৫-৩)
বিনি হাওয়েল (৪-০-২৫-২)
ফরহাদ রেজা (৩-০-৩২-১)
নাজমুল ইসলাম অপু (২-০-৩৪-০)
রংপুর রাইডার্স: ১৮১/৯ (২০)
ক্রিস গেইল ৮ (৯)
মেহেদী মারুফ ১০ (১০)
রাইলি রুশো ৮৩ (৪৪)
মোহাম্মদ মিঠুন ৪৯ (৩৫)
রবি বোপারা ৩ (৪)
বিনি হওয়েল ১৩ (৮)
মাশরাফি বিন মুর্তজা ০ (১)
ফরহাদ রেজা ০ (১)
সোহাগ গাজী ০ (২)
শফিউল ১০* (৪)
নাজমুল ইসলাম ১* (২)
বোলার:
আন্দ্রে রাসেল (৩-০-২৬-১)
রুবেল হোসেন (৩-০-২৬-০)
শুভাগত হোম (২-০-২৭-১)
সাকিব আল হাসান (৪-০-৩৫-১)
সুনীল নারিন (৪-০-৪০-২)
আলিস ইসলাম (৪-০-২৬-৪)
ঢাকা ডায়নামাইটস ২ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা আলিস ইসলাম।