তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৩নং ওয়ার্ড কুলাউড়া উপজেলায় সদস্য প্রার্থীদের মধ্যে চলছে নানা হিসাব নিকাশ। ইতোমধ্যে এক ভোটের দাম এক লক্ষ টাকা বলে জনমনে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনায় চায়ের কাপে ঝড় উঠেছে।
আগামীকাল সোমবার (১৭ অক্টোবর) মৌলভীবাজারসহ দেশব্যাপী জেলা পরিষদ নির্বাচন। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে মৌলভীবাজার জেলার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান একক প্রার্থী হওয়াতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে দ্বিতীয় বারের মতো চেয়ার আঁকড়ে রাখলেন। কিন্তু সদস্য পদে নির্বাচনের শেষ মুহুর্তে এসে জমে উঠেছে। ভোটারদের কদরও বেড়েছে।
৩নং ওয়ার্ড কুলাউড়া আসনে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫জন প্রার্থী। তারা হলেন বর্তমান জেলা পরিষদ সদস্য সেলিম আহমদ ও মাহবুবুর রহমান মান্না। এছাড়া কুলাউড়া পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলার ইকবাল আহমদ শামীম, ভাটেরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বদরুল আলম সিদ্দিকী নানু ও দৈনিক সমকালের কুলাউড়া প্রতিনিধি সৈয়দ আশফাক তানভীর।
কুলাউড়া উপজেলা পরিষদ ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে ৩নং ওয়ার্ডে মোট ভোটার ১৭২ জন। প্রার্থীদের মধ্যে ভোট কিনে বিজয়ী হওয়ার একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভোটাররা অভিযোগের সুরে জানান। ভোট কিনতে কসম করিয়ে ও এক লক্ষ টাকাও দেয়ার খবর ও শোনা যাচ্ছে। এছাড়াও টাকার সাথে ক্ষমতার দাপট, পেশিশক্তির ব্যবহারে ভোট নেয়ারও গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
সাধারণ ভোটারদের সর্বশেষ মূহুর্তে জানার চেষ্টা করলে কথা বলার মধ্যে অকোপটে জানান , আগের জনেই ভালো। প্রতি উত্তরে আবারো আগের জন মানে সেলিম আহমদের সম্ভবনার কথা স্বীকার করে।
এদিকে কুলাউড়া জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলা নিয়ে সংরক্ষিত নারী আসন -০১। ঐ আসনে লড়ছেন ৩ নারী প্রার্থী। তারা হলেন বর্তমান সদস্য শিরীন আক্তার মুন্নি ও জোবেদা ইকবাল। তাদের সাথে অপর প্রতিদ্বন্দ্বি হলেন রেহানা পারভীন। কুলাউড়ায় ১৭২, জুড়ীতে ৮১ এবং বড়লেখা উপজেলায় ১৪৬ ভোট মিলিয়ে ৩৯৯ জন ভোটারের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন নারী প্রার্থীরা। ভোটারদের মধ্যে বর্তমান ২ সদস্য নিয়েই চলছে আলোচনা।
কুলাউড়া নবীন চন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বড়লেখা নারী শিক্ষা একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কাঠালতলী ও জুড়ী উপজেলার দক্ষিণ জাঙ্গিরাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট গ্রহণের স্থান নির্ধারণ করা হয়।
মৌলভীবাজারের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, টাকা দিয়ে ভোট কেনার গাল গল্প কথা শুনে লাভ নেই। কোন প্রার্থী অবশ্য এ নিয়ে কোন রকম অভিযোগ ও করেনি। নির্বাচনে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তারের ব্যাপারে তিনি জানান, সামান্য কিছু ভোট। ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিযুক্ত থাকবে কঠোর অবস্থানে। কোন গুজবে কান দিয়ে লাভ নেই এবং পুরো জেলায় ভোট গ্ৰহন ইভিএম এর মাধ্যমে ভোট হবে।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহ্সান জানান, জেলায় ৭টা কেন্দ্রে ২টি করে কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সেই দুটি কক্ষে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আমার অফিসের মোবাইল থেকে ও তা মনিটারিং করা হবে। তাছাড়া একটি কেন্দ্রে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। সুতরাং এখানে সামান্যতম ত্রুটি বিচ্যুতির কোন সুযোগ থাকছে না। শান্তি শৃঙ্খলা বজায়ে সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন।