আইন বহির্ভুত উপার্জনের তথ্য খুঁজতে দুর্নীতি দমন কমিশন ডেকে পাঠাচ্ছে, আতংকে এখন অনেকেই। অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। দপ্তরটি সৎভাবে কাজ করলে, অবৈধ আয়ের উৎস খুঁজে পাওয়া যাবে সরকারী কর্মচারীদেরও। হঠাৎ ধনী হয়ে যাওয়া ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আলাদিনের প্রদিপটি খুজে পাওয়া যাবে। প্রতিহিংসা নয়, অবৈধ উপার্জন দেশে বৈষম্য সৃষ্টি করে দিয়েছে। কেউ অর্থাভাবে সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে পারেনা, আবার কেউ প্রতি সপ্তাহে বিদেশে যায় জুয়া খেলতে। অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে স্বপ্নের মত বিলাসি জীবন কাটায় কিছু না করেই। নামীদামি গাড়ীতে চড়ে অবাক করে দেয় অযোগ্য ব্যক্তিটিও। এসব দেখে মেধাবী ছেলেটিও ধনী হওয়ার স্বপ্ন দেখে শিক্ষিত নয়। একবার ধনী হয়ে গেলে কেউ আর খোঁজও করেনা, কি করে ধনী হলো জানতেও চায়না। সমাজের গন্যমান্য হয়ে জননেতাও বনে যায় কেউ কেউ। খোঁজ করলে প্রত্যেকেরই সামনে এমন উদাহরন পাওয়া যাবে মূখ খুলেনা ভয়ে।
বাংলাদেশ উন্নত হয়েছে নিশ্চিত কিন্তু, সব উন্নয়ন লুটেরা আর ক্ষমতাশালীদের দখলে। রাজনীতি এই লুটেরাদের টিকিটিও স্পর্শ করতে পারেনি। অপবাদ বহন করতে হয়েছে রাজনীতিকে। এখন লুটপাটের বড় ক্ষেত্রটি হল ব্যাংক। কৌশলে ব্যংকের টাকা লোন নিয়ে ফেরৎ দেয়নি, অনেকে বিদেশে পালিয়ে গেছে। লোন দেওয়া নেওয়াতেও দুর্নীতি হয়েছে। অনুমোদন দিয়েছেন যারা, তাদের সম্পদের হিসাবটিও খোঁজা জরুরী। সংগবদ্ধভাবেই দেশের সম্পদ লুট করে ভাগা ভাগি করে খেয়েছে লুটেরারা। এদের সবাইকে ধরে আইনের আওতায় আনা না গেলে দেশের বড় ক্ষতি হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্ত্তাব্যক্তিরাও সবাই ধোয়া তুলসি পাতা ভাবা সঠিক হবেনা। জানার জন্য কাউকে ডাকা হলেই সব তথ্য আবিস্কার হয়ে যায়না। দুদকেও ভুত ঢুকেছে, তাদেরও সন্ধান করা জরুরী। রাজনীতি শুধু রাষ্ট্র পরিচালনা করা নয়, দেশের সব অপরাধ চিহ্নিত করাও রাজনীতির অংশ। এই মহৎ কর্মে ব্যর্থ হলে সামগ্রিকভাবেই রাজনীতি ব্যর্থ হয়ে যাবে। দেরীতে হলেও বর্তমান সরকার দুর্নীতির ক্ষেত্র আবিস্কার করতে পেরেছে। এই অভিযান সফল হলে বাংলাদেশ ঘুরে দাড়াবে আর, অর্থনীতির মাপকাঠি ভিন্ন চিত্র প্রদর্শন করবে।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
টরেন্টো, কানাডা
১৮ সেপ্টম্বর ২০২০।