আদিফ হাসানের পরিচালনায় নির্মাণাধীন নাটক ‘শ্বশুর বাড়ির প্রথম দিন’ র সেটে তর্কাতর্কি, পুলিশ আসা এবং শুটিং বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে শাস্তি পেয়েছেন রুকাইয়া জাহান চমক। সেজন্য আর্থিক জরিমানার সঙ্গে চমক কে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। সার্বিক বিশ্লেষণ শেষে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে অভিনয় শিল্পী সংঘ।
আর চমক শাস্তি’র বিষয়টি মেনে দুঃখ প্রকাশ করলেও তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বুধবার (১৬ আগস্ট) পরপর দুটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে সরাসরি কিছু না বললেও ইশারা ছিল ভিন্ন।
অনেকটা কবিতার ছলে তিনি লেখেন, দিন শেষে সব দোষ নন্দ ঘোষের, আনন্দবাবু তো তুলসীপাতা। তা-ও আবার ধোঁয়া, যায় না তাকে ছোঁয়া। নন্দ ঘোষের মুখে তালা, ভয়ভীতিও আছে। পাছে সবাই করে ছি ছি তারে, কেটে দেয় তার ডাল-পালা, যদিও একটু বাড়ে। থাক, এবার না হয় বাঁচুক প্রাণ। কে নেবে, যদি রাখে ঈশ্বর মানীর মান। দুষ্টু লোক এবার দিলেও ফাঁকি, মনে রেখো, তার হিসেব রইল শ’খানেক বাকি।
তিনি আরও এক স্ট্যাটাসে লেখেন, বাংলাদেশ একদমই একটি নারীবাদী দেশ। এখানে মেয়েরা সর্বস্থলে সবসময় নিরাপদে এবং নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারে, কোথাও কারও কাছে কিংবা কোনো পরাশক্তি বা ষড়যন্ত্রের কাছে মাথানত করতে হয় না। নিরাপদে নির্ভিক থাকুক প্রতিটি মেয়ে।
এর আগে, নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হন চমক। সেইসঙ্গে ফখরুল বাশার মাসুম ও আরশ খানের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। এ ছাড়া ভবিষ্যতে এই ধরনের কাজ করবেন না মর্মে লিখিত অঙ্গীকার দেন। তবে যে নাটকের সেটে ঘটনাটি ঘটেছিল এবং সে সময় যারা উপস্থিত ছিলেন ওই নাটকের সেটে তাদের সবার সামনে চমক কে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে বলে সংগঠনগুলো থেকে জানানো হয়েছে।
গত সোমবার (১৪ আগস্ট) অভিনয় শিল্পী সংঘ এক বার্তায় সভার সিদ্ধান্ত লিখিত আকারে পাঠায়। সেখানে অভিনেত্রী চমক কে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি হিসেবে আগামী ছয় মাসের জন্য চার শর্তে অভিনয় ও ব্যক্তিগত কাজ মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়।
দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় চমক এর ব্যাপারে কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠনটি। এগুলো হলো-
- ক্ষতিগ্রস্ত নাটকের প্রযোজক, পরিচালক ও জ্যেষ্ঠ অভিনেতা ফখরুল বাশার মাসুমসহ সকলের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করবেন ও ক্ষমা চাইবেন।
- ‘শ্বশুর বাড়ির প্রথম দিন’ নাটকটি নির্মাণ সম্পন্ন করতে বাকি যে অর্থের প্রয়োজন হবে, তা ক্ষতিপূরণ হিসেবে চমক প্রদান করতে বাধ্য থাকবেন।
- অভিনেতা আরশ খান ও পরিচালক আদিফ হাসানের বিরুদ্ধে চমক থানায় যে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তা অনতিবিলম্বে নিষ্ক্রিয় করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
- ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না, যদি ঘটে তবে সংগঠন কর্তৃক যে কোনও শাস্তি গ্রহণ করতে তিনি বাধ্য থাকবেন বলে লিখিতভাবে অঙ্গীকার করবেন। আগামী ৬ মাস তিনি সকল সংগঠনের পর্যবেক্ষণে থাকবেন। তার বিরুদ্ধে কোনও প্রকার অভিযোগ যেন না আসে, সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকবেন।
প্রসঙ্গত, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন টেলিপ্যাবের সাধারণ সম্পাদক সাজু মুনতাসির, কার্যনির্বাহী সদস্য বাবুল আহমেদ, ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি অনন্ত হীরা, সহসভাপতি আশরাফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সাগর, অভিনয়শিল্পী সংঘের সহসভাপতি আনিসুর রহমান মিলন, সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজনীন হাসান চুমকি প্রমুখ।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম