ঈশাত জামান মুন্না, লালমনিরহাট প্রতিনিধি : লালমনিরহাটে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ব্যাংক কর্মকর্তাসহ নতুন করে ১১ জন করোনা ভাইরাস পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। এতে পাঁচ উপজেলায় মোট করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০৫ জনে।
বিভিন্ন সুত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, ২৭ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট সিভিল সার্জন কার্যালয় পাওয়ার পর ১১ জনের করোনা ভাইরাস পজিটিভ ধরা পড়ে। নতুন আক্রান্ত অনেকের হালকা জ্বর, গলা ব্যথা, সর্দি ও মুখে স্বাদ ছিল না। এসব উপসর্গ দেখা দিলে তারা নমুনা পরীক্ষার জন্য জমা দেন। আজ তাদের রিপোর্ট আসে।
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সহকারী প্রধান পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, লালমনিরহাট সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জে আর সরোয়ার (৩২), লালমনিরহাট ১০০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালের দুই ফার্মাসিস্ট জসিম উদ্দিন (৩১) ও মোহাম্মদ আলী (৩২), সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও বর্তমানে জেলা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক আব্দুল খালেক বাবু (৩৫), সোনালী ব্যাংক লিমিটেড এর কালীগঞ্জ শাখার অফিসার ক্যাশ পদে কর্মরত আব্দুল জলিল (৫৫), রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের আদিতমারী শাখায় সহকারী অফিসার (গ্রেড-২) পদে কর্মরত রবিউল ইসলাম (২৪), রাজধানী ঢাকায় দিগন্ত সেভিংস এনজিও’তে কর্মরত ঢাকা ফেরত আদিতমারী উপজেলার নামুড়ী এলাকার জাকারিয়া হাসান (৩৩) ও তার স্ত্রী মমতাসির অনু (৩১), হাতীবান্ধা উপজেলার পারুলিয়া এলাকার ব্যবসায়ী সজিবুল আলম (৩৪), রংপুর তাজহাট কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট এর প্রশিক্ষক ও লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর এলাকার শামসুন্নাহার বেগম (৫২) ও একই এলাকার আবু বক্কর সিদ্দিক (৫২) করোনা ভাইরাস পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। তবে তারা প্রত্যেকে বর্তমানে সুস্থ আছেন।
লালমনিরহাট সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১১ এপ্রিল লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের বাসিন্দা রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা স্টেডিয়ামপাড়া এলাকা থেকে ফেরত আসা একজন রাজমিস্ত্রীর শরীরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর ১১ জুলাই পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৭৩টি নমুনা সংগ্রহ করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালের পিসিআর ল্যাবে করোনাভাইরাস শনাক্তের জন্য পাঠানো হয়। গত ১১ জুলাই পর্যন্ত পাঠানো নমুনার মধ্যে ১৯৫৮টি রিপোর্ট পাওয়া যায়। এরমধ্যে ২০৫ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে হাতীবান্ধায় একজন ও পাটগ্রাম উপজেলা একজনসহ মোট দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় জানান, সর্বোচ্চ সতর্কতা এবং জনসচেতনতা সৃষ্টি করার পরও জেলায় ১৯৫৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে পাটগ্রামে ৭৫ জন, হাতীবান্ধায় ৩০ জন, কালীগঞ্জে ২৮ জন, আদিতমারীতে ২২জন ও সদর উপজেলায় ৫০ জন করোনা ভাইরাস পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। এরমধ্য ১০৬ জন হোম আইসোলেশনে রয়েছেন এবং ৯৭ জন সুস্থ হয়ে বাড়ীতে ফিরে গেছেন। উল্লেখ্য পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার মোহন্ত সহ থানার এক উপ পরিদর্শক স্বত্রীক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। করোনায় সম্মুখ যোদ্ধা হিসাবে ডাক্তার-নার্স স্বাস্থ্য সহকারীর পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে কাজ করে আসছেন পুলিশ প্রশাসন।