বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবিকে ঘিরে লালমনিরহাট জেলাজুড়ে ব্যাপক, হামলা, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সাংবাদিকসহ ৩০ জন আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষের সময় লালমনিরহাট ইউএনও অফিসসহ-বাসা ও আ.লীগ কার্যালয় বিভিন্ন স্থাপনায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে যমুনা টিভি’র ক্যামেরাম্যানসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় দুইজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।
রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরে জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র মিশন মোড়, আদিতমারী কালীগঞ্জ ও পাটগ্রাম উপজেলায় পৃথক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, এক দফা দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলনে যোগ দেন অভিভাবকসহ বিএনপি, জামায়াতের নেতাকর্মীরা। দুপুরে লালমনিরহাট শহরের কেন্দ্র মিশন মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিল থেকে পুলিশকে ধাওয়া দিলে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে কয়েক রাউন্ড বারার বুলেট ছুঁড়ে। এতে যমুনা টিভি’র ক্যামেরা ম্যান মাহবুব রহমানসহ ৫ জন আহত হয়েছেন।
একই সময় আদিতমারী উপজেলা সদরের সরকারী জিএস উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠ থেকে ভারি বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে মিছিল বের করে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। মিছিলটি ফেরার পথে আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে ইট পাটকল নিক্ষেপ করে এবং স্মৃতিসৌধ এলাকায় আওয়ামী লীগের বিলবোর্ড ভাঙচুর করে।
অপরদিকে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে মিছিলকারীরা। ইউএনও-এর বাসা, সিসিটিভি, কিছু বিলবোর্ড, তুষভান্ডারে অবস্থিত শ্রমিকলীগ ও আওয়ামীলীগ কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। এরপর মিছিল নিয়ে কালীগঞ্জ থানা অভিমুখে রওয়ানা দেন প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার মানুষ। তারা থানা দখলের চেষ্টা করলে সেখানে পুলিশসহ দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেট নিক্ষেপ করেন। এতে ১০ শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমাম জানান, শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কিছু দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালিয়ে সিসিটিভি ও কিছু বিলবোর্ড ভাঙচুর করেছে। যা ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে।
অপর দিকে একই দাবিতে মিছিল বের করে পাটগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা করা হয়। সেখানেও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত পাঁচজন পথচারী আহত হন।
এদিকে হাতীবান্ধা উপজেলায় মেডিকেল মোড়ে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিলে আওয়ামীলীগ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে যায়।
ঘটনার বিষয়ে লালমনিরহাট পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশ অত্যন্ত পেশাদারীত্বর পরিচয় দিয়ে আসছিল। কিন্তু আন্দোলনকারীরা পুলিশের উপর পাথর নিক্ষেপ করলে কালীগঞ্জে থানা পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
আজ ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১০:১৩ | বৃহস্পতিবার
ডিবিএন/এসই/ এমআরবি