ঈশাত জামান মুন্না, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃকয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। ফলে লালমনিরহাটের তিস্তা তীরবর্তী এলাকার বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। পানিতে জেলার জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, তুষভান্ডার কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
বাড়ীঘরে পানি প্রবেশ করায় দুর্ভোগে পড়েছেন বন্যার্তরা। বন্যা প্রবণ এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট। সবকিছু তলিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে গো খাদ্যের চরম সংকট। পানিতে তলিয়ে রয়েছে ১২শ হেক্টর জমির ধান,বীজতলা,ভূট্টা খেতসহ বিভিন্ন ফসল। এদিকে বন্যার পানি প্রবেশ করায় ২০টি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
সোমবার (২০ জুন) দুপুর ২টা থেকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেমি) বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিন্টার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভোর থেকে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার নিচে থাকলেও সকাল ১০ টার পর থেকেই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা তীরবর্তী এলাকার মানুষ এবার বড় বন্যার শঙ্কা করছেন।
হঠাৎ তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়া তিস্তা পাড়ের মানুষ বড় বন্যার আশঙ্কা করলেও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দাবি, তিস্তায় বড় ধরনের বন্যার কোনো শঙ্কা নেই। বৃষ্টির কারণে উজানের ঢেউয়ের ফলে পানির প্রবাহ বেড়েছে। ভারতে পানির প্রবাহ কমে যাচ্ছে। তাই ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানির প্রবাহ কমে যাবে বলে দাবি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাওবৌ) ডালিয়া শাখা। পলি ও বালু জমে তিস্তা ভরাট হওয়ায় সামান্য পানির প্রবাহ লোকালয়ে ঢুকে বন্যার সৃষ্টি করে। তবে আতঙ্কিত না হতে পরামর্শ দিয়েছেন বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোঃ আবু জাফর জানান, বন্যা কবলিত জেলার পাঁচ উপজেলায় ১৫০ মেঃ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গত শনিবার তা বিতরণ শেষ হয়েছে। বন্যা কবলিত যেসব এলাকা আছে সেগুলোতে শুকনো খাবার বিতরণের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তিনি আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।