রোহিঙ্গাদের এনআইডি কেলেঙ্কারির ঘটনায় এবার নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি এবং ট্রাভেল ব্যবসায়ীদের নাম উঠে এসেছে। রোহিঙ্গাদের সহযোগিতার অভিযোগে তিনটি ট্রাভেল এজেন্সিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারে এনআইডি ও জন্মনিবন্ধন সনদ জমা দিয়ে পাসপোর্ট নিতে যাওয়া অন্তত ২০০ রোহিঙ্গার তথ্য প্রমাণ নিয়ে মাঠে নামতে যাচ্ছে দুদকের তদন্ত দল।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সাইদ বলেন, রোহিঙ্গারা যাতে পাসপোর্ট না পায় সে জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কাউকে সন্দেহ হলে তাকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এর বাইরে পাঁচলাইশ পাসপোর্ট কার্যালয় আরো ৩০ জনকে রোহিঙ্গা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তবে চিহ্নিত এসব রোহিঙ্গার ভাষা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার সঙ্গে মিল থাকায় সমস্যা পড়তে হচ্ছে পাসপোর্ট অধিদপ্তরকে।
পাঁচলাইশ পাসপোর্ট কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আল আমিন মৃধা বলেন, চট্টগ্রামের মানুষের সঙ্গে ভাষা ও চেহারায় মিল থাকায় তাদের আলাদা করা আমাদের পক্ষে কঠিন হয়ে যায়।
এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের পাসপোর্টের পাশাপাশি এনআইডি কার্ড পেতে সহযোগিতাকারী জনপ্রতিনিধিদের শনাক্ত করতে এসব নথিপত্র পর্যালোচনা শুরু করেছে দুদকের তদন্ত দল।
তদন্ত চলমান থাকার কথা বলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান বলেন, একজন অফিস সহায়ককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। অন্যদের ব্যাপারে তদন্ত কমিটি নির্দেশনা দেয়নি।
দুদকের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে, ট্রাভেল এজেন্সিগুলো রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট তৈরি করে দেয়ার পাশাপাশি বিদেশ যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।
চট্টগ্রামে দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন বলেন, প্রায় ১৫০টির মতো পাসপোর্টের তথ্য আমরা নিয়েছি। সেগুলো এখন যাচাই-বাছাই করা হবে।
গত দু’সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রোহিঙ্গাদের এনআইডি কার্ড কেলেঙ্কারি নিয়ে নির্বাচন কমিশন, দুদক এবং পুলিশের একাধিক তদন্ত দল কাজ করছে। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশনের একজন অফিস সহায়কসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে চক্রের মূল হোতারা।