আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর শহর বারদিয়ানস্কে রাশিয়ার একটি বড় সামরিক জাহাজ ধ্বংস করার দাবি করেছে ইউক্রেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এ দাবি করে ইউক্রেন নৌবাহিনী। খবর বিবিসির।
ফেসবুকের ওই পোস্টে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সকালে আজভ সাগরের বন্দরে ‘ওরস্ক’ নামের একটি বড় জাহাজে আঘাত করা হয় এবং এটিতে আগুন লেগে যায়। দখলদারদের ‘ওরস্ক’ জাহাজটি রাশিয়ার দখলকৃত বারদিয়ানস্ক বন্দরে ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইউক্রেনের গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি রাশিয়ান জাহাজ ডুবে গেছে এবং অন্য দুটিতে আগুন লেগেছে। একই সঙ্গে রাশিয়ার একটি গোলাবারুদের ডিপো এবং একটি জ্বালানি গুদাম আঘাত হানা হয়েছে।
অন্য সূত্র থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করতে পারেনি সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
রাশিয়া কয়েক সপ্তাহ আগে বারদিয়ানস্ক দখল করে এবং বন্দরটি জ্বালানি সরবরাহের কাজে ব্যবহার করছে। এটি ক্রিমিয়া এবং অবরুদ্ধ শহর মারিউপোলের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত।
উল্লেখ্য, পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য কয়েক বছর আগে আবেদন করে ইউক্রেন। মূলত, এ নিয়েই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর মধ্যে ন্যাটো ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় দ্বন্দ্বের তীব্রতা আরও বাড়ে। ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে যুদ্ধ শুরুর দুই মাস আগ থেকেই ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রাখে মস্কো। কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে না আসায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া। ঠিক তার দুদিন পর ২৪ তারিখ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে।
এ দিকে চলমান এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে ইউক্রেন ছেড়েছেন প্রায় ৩৩ লাখ মানুষ। যুদ্ধে ইউক্রেনের ১৩শ’ সেনা নিহত এবং রাশিয়ার ১৫ হাজার ৬০০ সৈন্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন। তবে রাশিয়া বলছে, যুদ্ধে তাদের প্রায় ৫০০ সৈন্য নিহত এবং ইউক্রেনের আড়াই হাজারের বেশি সেনা নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া জাতিসংঘ জানিয়েছে, রুশ অভিযানে ইউক্রেনে ৯২৫ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। সূত্র : বিবিসি।