মোঃ জহির হোসেন, লক্ষ্মীপুরঃ সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশেও বেড়ে চলছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। চলতি বছর মার্চ মাসের ৮ তারিখ সর্বপ্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় বাংলাদেশে। এরপর তা বাড়তে থাকে। শুরু হয় লক ডাউন জনসচেতনতায় ব্যাপক ভাবে প্রচার। বাঁচতে হলে বাঁচাতে হবে, বাঁচার জন্য সামাজি দুরত্ব ও জন সচেতনতার বিকল্প নেই।
লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুরে যেন করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য লকডাউন কার্যকর করার জন্য প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থেকে কাজ করেন। সারা দেশের ন্যায় রায়পুরে দীর্ঘদিন ধরে লকডাউন ছিল এবং তা এখনো বলবৎ আছে। লকডাউনে রায়পুর জরুরী সেবা ফার্মেসী খোলা থাকে এবং নিত্য প্রয়োজনীয় মুদি দোকান, কাঁচা বাজার, মাছের বাজার সকাল থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
শপিং সেন্টার কাপড়ের দোকান, টেইলার্স , ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স সহ আন্যান্য দোকান বন্ধ থাকে। সীমিত ভাবে চলে ব্যাংকিং কার্যক্রম। প্রথম থেকে প্রশাসন কঠোর ভাবে লকডাউন তদারকি করে, এতে কিছুদিন রায়পুর করোনা মুক্ত ছিল। হঠাৎ কিছু ব্যাবসায়ী ও ক্রেতারা অসচেতন হয়ে পড়ে প্রায় ব্যাবসায়ীরা ফজরের নামাজের পর অর্থাৎ ভোর থেকে দোকান সার্টার অর্ধেক খুলে কেনাবেচা করে প্রশাসনকে দেখলে সার্টার অটকিয়ে পালিয়ে যায়। এভাবে চলছিল চোর পুলিশ খেলার মত। প্রায়
প্রতিদিনই রায়পুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং আক্তার জাহান সাথী এসিল্যান্ড (ভূমি) বাজার তদারকি ও ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে কিছু দোকানি ও পথচারিদের অরথাৎ যারা লকডাউন ভঙ্গ করেছে তাদের জরিমানা করেন।
উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে জনগনকে সচেতন করেন উপজেলা চেয়ারমেন, ভাইস চেয়ারমেন, পৌর মেয়র, ইউপি চেয়ারমেন মেম্বার , আনসার ও স্বেচ্ছাসেবীরা।
৪ মে সর্বপ্রথম রায়পুরে ১৩ বছরের এক কিশোরের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়।
০৪ মে রাত ১১ টা লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন সূত্রে জানা যায় লক্ষ্মীপুর জেলার করোনা টেস্ট রিপোটের মধ্যে রায়পুরের ১৩ বছরের এক কিশোরের শরীরে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এর পর তা বেড়ে এখন রায়পুরে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া যায় ৪ জনের শরীরে।
ঈদ উপলক্ষে ঘোষণা আসে সীমিত পর্যায়ে শর্ত স্বাপেক্ষে কিছু দোকান খোলা যাবে। সে অনুযায়ী রায়পুরে দোকান খোলা হয়। এতে রায়পুর বাজারে জনসমাগম বেড়ে যায় ব্যাপক ভাবে। রায়পুরের বিভিন্ন দোকান ও মার্কেটে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা যায়। কেহই মানেনা সামাজিক দুরত্ব এতে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সচেতন মহল থেকে দাবি উঠে দোকান বন্ধ করার। বিষয়টি রায়পুর উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা চেয়ারমেন, ভাইস চেয়ারমেন, রায়পুর পৌর মেয়রের নজরে আসে।
এবিষয়ে গত কাল সোমবার ( ১১ মে ) উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবরীন চৌধুর, উপজেলা চেয়ারমেন মামুনুর রশিদ , উপজেলা ভাইস চেয়ারমেন মারুফ বিন জাকারিয়া ও রায়পুর পৌর মেয়র ইসমাইল হোসেন খোকন জরুরী বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নেন।
আজ মোঙ্গলবার (১২ মে ) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জরুরী সেবা ও নিত্যপন্যের দোকান ছাড়া কোন দোকান খোলা যাবে না। ঘোষণার পর মাইকিং করা হয় এরপর থেকে বাজারে জনসমাগম কমতে থাকে। উক্ত সিদ্ধান্তে রায়পুরবাসী ও সচেতন মহল রায়পুর উপজেলা প্রশাসন ও পৌর মেয়র সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।