মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আখাইলকুড়া ইউনিয়নের মনু নদীর তীর রক্ষা বাঁধে সড়কের ইট তুলে নিয়েছেন চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান ইট আত্মসাতের জন্য প্রকল্প আসার বাহানা দিয়ে সড়কের ইট তুলে নিয়েছেন তারা।
জানা যায়, গ্রামীণ মাটির সড়ক টেকসইকরণের লক্ষে হেরিং বোন বন্ডকরণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে উপজেলার আখাইলকুড়া ইউনিয়নের নতুন ব্রিজের পূর্ব পাড়ের ৫শ মিটার সড়ক ১৮ লাখ ৩ হাজার ৯৮৬ টাকা ব্যয় করে ইটসলিং সড়ক করা হয়।
✪ আরও পড়ুন: শিশুহত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ঘাতক গ্রেপ্তার
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সদর উপজেলার আখাইলকুড়া ইউনিয়নের নতুন ব্রিজ থেকে আখাইলকুড়া গ্রাম পর্যন্ত সড়ক এখন ধুলা বালিতে ভরপুর যেন ধূলোর রাজ্যে পরিণত। সড়কের ইটগুলো তুলে নিয়ে আখাইলখুড়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে রাখা হয়েছে। ধুলোবালিতে ভরা সড়ক দিয়ে সাধারণ মানুষের চলাচলে ভোগান্তির যেন অন্ত নেই। এ নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী।
অসুস্থ আব্দুল ওয়াহিদ ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফিরছেন। ক’দিন আগেই তার বাড়ি যাবার রাস্তা ছিল ইটসলিং করা। কিন্তু এখন বালির সড়কে পরিণত হয়েছে। অসুস্থ অবস্থায় একটি অটোরিক্সা করে বাড়ি ফেরার পথে জানালেন, ক’দিন আগেই আমাদের রাস্তায় ইট ছিল। কিন্তু এখন কোনো ইট নেই। চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা ইট তুলে নিয়েছেন। খুব কষ্ট করে একটা অটোরিক্সা জোগাড় করে এই ধুলাবালির মধ্যে যেতে হয়েছে।
অটোরিক্সা চালক বকুল কর বলেন, আগে রাস্তাটি ইটসলিং ছিল। এখন কী কারণে চেয়ারম্যান ইট তুলে নিলেন, তা জানা নেই। এই রাস্তা দিয়ে এখন গাড়ি চালানো সম্ভব নয়।
আখাইলকুড়া গ্রামের বাসিন্দা শাকিল বলেন, চেয়ারম্যান বললেন নতুন প্রকল্প এসেছে। কাজ হবে তাই ইট তোলা হচ্ছে। এখন কাজেরও কোনো খবর নেই।
“ডিজিটাল বাংলা নিউজ” অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
আরেক বাসিন্দা মকদ্দুছ মিয়া বলেন, চেয়ারম্যান আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। মেম্বাররা তাকে ভুল পরামর্শ দিয়ে আমাদের ভোগান্তিতে ফেলেছেন। কী কারণে তারা এটা করলেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।
মহসিন মিয়া বলেন, খারগাঁও, আখাইলকুড়া, নোয়ারাই, এই তিন গ্রামে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ বসবাস করেন। সবাই এই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করেন। তিনটি প্রাইমারি স্কুল আছে। এই সড়কের ইট তুলে নেওয়ায় সবাই ভোগান্তি পড়েছেন। ধুলাবালির কারণে এলাকার মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
আব্দুল ওয়াহিদ বলেন, কাজ শুরু হওয়ার পর ইটগুলো তুললে মানুষ ভোগান্তিতে পরতে হতো না। জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয় ও দুরদর্শিতার অভাবে মানুষ এখন কষ্টে আছে।
আখাইলকুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান বদরুজ্জামান চুন্নু বলেন, এখানে বাঁধ নির্মাণের কাজ হবে। তাই ইট যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য আমরা তুলে এনেছি।
✪ আরও পড়ুন: ২২৭ কোটি টাকার বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা
পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের সেকশনাল অফিসার মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, বাঁধটা হচ্ছে আমাদের। আর হেয়ারিং কাজটা করেছে পিআইও অফিস। এটা আমি পিআইওকে জানিয়েছি। তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। সময়ে বলে দিবে আসল রহস্য কি!
ডিবিএন/এসডিআর/মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান