ডিবিএন ডেস্কঃ রাশিয়া-ইউক্রেন উত্তেজনায় আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম অনেক বেড়ে গেছে। ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়া এবং মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সামরিক জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করার পরিপ্রেক্ষিতেই এই দাম বৃদ্ধি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
মার্কিন গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৯৫.৫০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৯৬.৫৪ ডলারে পৌঁছেছে। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের দর ৯৩ দশমিক ১০ ডলার। ২০১৪ সালের পর এটিই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের সর্বোচ্চ মূল্য।
ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির পূর্বাভাস, এ বছরে বিশ্বে তেলের চাহিদা দিনে ৩২ লাখ ব্যারেল বেড়ে সর্বকালীন রেকর্ড উচ্চতায় উঠতে পারে। সে ক্ষেত্রে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ তেলের জোগান বাড়িয়ে অনিশ্চিত বাজার কিছুটা শান্ত করতে পারে বলে মত তাদের।
গেল এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রায় ৬ শতাংশ বেড়েছে। ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ। আর হিটিং অয়েলের দাম বেড়েছে ৬ শতাংশ। এর আগে জানুয়ারি মাসে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে ১৬ শতাংশের বেশি। ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১৫ শতাংশ। আর হিটিং অয়েলের দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশের ওপরে।
গত এক বছরের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেল ৬১ দশমিক ৭১ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৫৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর হিটিং অয়েলের দাম বেড়েছে ৬৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
এদিকে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (আইইএ) তথ্য অনুযায়ী, গেল বছর বিদ্যুতের বৈশ্বিক চাহিদা ৬ শতাংশ বেড়েছে। আর বিশ্বজুড়ে বিদ্যুতের মোট চাহিদা বৃদ্ধির অর্ধেকই হয়েছে চীনে। ২০২১ সালে দেশটিতে বিদ্যুতের চাহিদা ১০ শতাংশ বেড়েছে। এদিকে চীনসহ অনেক দেশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা ব্যবহারের নীতি থেকে বেরিয়ে আসার কারণে এখন তেলের চাহিদা বাড়ছে। তাতে দাম আরও বাড়বে বলেই ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা।
এছাড়া, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রাকৃতিক গ্যাস এবং বিদ্যুতের দাম শতকরা প্রায় ১০ ভাগ বেড়েছে।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সুলিভান গত এক সপ্তাহ ধরে বারবার বলে যাচ্ছেন, যেকোনো সময় ইউক্রেনে রাশিয়া সামরিক হামলা শুরু করতে পারে। সেক্ষেত্রে একথা পরিষ্কার যে, মার্কিন র্কমকর্তাদের বক্তব্যে প্রভাবিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক তেলের বাজর।
অন্যদিকে, রাশিয়া মার্কিন অভিযোগ নাকচ করে জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।