বাংলাদেশে একটি কার্যকর বিরোধী দল প্রয়োজন সে কথা সকলেই মনে করে। শুধু রাজনীতির জন্যই নয় গনতন্ত্র রাক্ষার ক্ষেত্রেও বিরোধী দল আবশ্যক। সরকারও এই প্রয়োজনিয়তা অনুভব করে তাদের সাফল্য প্রমানের জন্য। কিন্তু বাংলাদেশের কোন দল যোগ্য বিরোধী দল হিসাবে ভূমিকা রাখতে পারেনি। দল হিসাবে বি এন পি ব্যর্থ। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে বসে সরকারকে সমালোচনা শুনতেই হবে। কিন্তু জনতার হয়ে কথা বলবে বিরোধী দল। বি এন পি দেশের দিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল এবং রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে তিন মেয়াদে। কিন্তু বিরোধী দল হিসাবে যোগ্যতা প্রমান করতে পারেনি। দল হিসাবেত নয়ই জোট গঠন করেও যোগ্য নেতৃত্ব দিতে পারেনি। দলের নেতাদের বক্তব্য বিবৃতি জনগন গ্রহন করেনি। কারন তারা ক্ষমতায় থেকে দুর্নীতি করেছে, জন বিদ্রোহে ক্ষমতা হারিয়েছে। অর্থ আত্নসাৎ করে জেল খেটেছে দলনেত্রী। দিতীয় নেতাও সন্ত্রাস আর অর্থ লোপাট করে বিদেশে পলাতক। নেতৃত্বহীন দলটির নেতা-কর্মীরা ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে গেছে। শক্তি যোগাতে দলছুট নেতাদের সঙ্গে জোট বেঁধেছে ঐক্যের। যুদ্ধাপরাধী জামাতের সঙ্গে গাঁট বেধেছে রাজনীতির। আর্থিক সুবিধা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেছে জামাতকে। নির্বাচনে নমিনেশন বানিজ্য করে বিদেশে অর্থ পাঠিয়েছে নেতাকে। অর্থ দন্ধে জড়িয়েছে, সংবাদ হয়েছে গনমাধ্যমে। কেন্দ্রিয় পদ বিক্রি করেছে উচ্চ দামে। ত্যগী কর্মীরা হতাশ হয়েছে, জনগনের সমর্থন হারিয়েছে দল। নেতৃত্বহীন বি এন পি নিঃস্ব হয়েগেছে রাজনীতিতে।
শুধু বি এন পি নয় স্বনামধন্য ব্যক্তিরাও দল গঠন করেছেন। গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারের অঙ্গিকার করেছেন। সংবিধানের কথা বলে জড়ো করেছেন চেনা মূখ। কিছুদিন পরেই দন্ধে বিভক্ত হয়ে এখন নামেই দল কেবল। মাঝে মাঝে জ্ঞান বিলান, সরকার পতনের হুঙ্কার দেন দম্ভে। কোন ইস্যুতেই নেতারা এক হতে পারেনা। পতন চান সরকারের। জমাত থেকে গেছে সতীর্থ বি এন পি’র সাথে নিরাপদে। ৭১ এ জামাতের ভুমিকাটি এখন আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউ বলেনা। বাঘা বাঙালীও প্রতিবাদ করে নরম সূরে। বঙ্গবন্ধুকে আড়াল করতে মুক্তিযূদ্ধের নেতারাও ভাসানীকে টেনে আনেন মঞ্চে। নিজেদের ঐক্য না থাকলেও “হাসিনা হটাও” ইস্যুতে জড়ো হয় একসাথে। কোন ইস্যুতেই বিরোধী নেতাদের বলিষ্ঠ ভুমিকা নেই। উষ্কে দিয়ে অপেক্ষা করে রাস্তায় নামবে জনতা। নিরাপদ দুরত্বে থেকে অপেক্ষা করে সরকার পতনের। জনগন সাড়া দেয়নি যৌক্তিকভাবেই। ব্যর্থ নেতারা হুঙ্কার দেন প্রতিদিন। নেতৃত্বহীন দলের ভরসা ছেড়ে প্রযুক্তি নির্ভর মতামত লিখে শোস্যাল মিডিয়াতে। মিডিয়ার সংবাকে পুঁজি করে নেতারা বক্তব্য দেন ক্যমেরার সামনে বসে। জনগনের কোনই সম্পৃক্ততা নেই এই রাজনীতিতে।দপ্তরে বসে নিত্য অভিযোগ করলেও নিস্প্রাভ নেতারা। ভোট চুরির অভিযোগ করলেও জনসমর্থন হারিয়েছে আগেই। নির্বাচনে প্রচারনা না চালিয়ে আগেই বলে দিয়েছে সুষ্ঠ হবেনা নির্বাচন। অথচ পাকিস্তানের শ্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সংগ্রাম করেছে ২৪ বছর। প্রতিকুলতা মোকাবেলা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নির্বাচন করেছে- বিজয়ী হয়েছে। জনগন ছিল দলের প্রেরনা-শক্তি। বর্তমানে যারা বিরোধী দলের ভুমিকায় তারা জনবিচ্ছিন্ন। যোগ্য নেতৃত্বও নেই দলে। মিডিয়ার প্রচারনায় যুক্ত হয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে ক্ষমতার সুযোগ নিতে চায়। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সহজ প্রাপ্তি অর্জন করতে চায় নেতারা। দলের গনতান্ত্র বা জনগনকে সম্পৃক্ত করার যোগ্যতা তাদের নেই। পক্ষান্তরে শেখ হাসিনা দেশের সব দল এবং নেতার সাথে একাই রাজনীতি করছেন যোগ্যতায়। উন্নয়ন দেখিয়ে জনগনকে সাথে রেখেছেন। দেশের জনগন বিরোধী দলের আন্দোলনে সাড়া দেয়নি-দিবেনা কারন নেতৃত্ব নেই। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে হাজার রকম অভিযোগ রয়েছে কিন্তু শেখ হাসিনাকেই সৎ মনে করে দেশের ১৮ কোটি মানুষ। জোর করে নয় নির্বাচনে জয়ী হয়েই আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনা করছে। বার বার আঘাত করে নেত্রীকে হেলানো যায়নি কারন জনগন তার সাথে। অবশ্যই দেশে বিরোধী দল প্রয়োজন তবে আগে প্রয়োজন একটি যোগ্য দল গঠন। দলছুট নেতা নয় জনগনের সমর্থনে যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে একটি দল প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। এখন যারা বিরোধী দলের অবস্থানে রয়েছেন তাদের রাজনীতি দেখে ফেলেছে জনগন। এই নেতাদের উদ্দেশ্যে বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, আপনারা অসমর্থ প্রমান করেছেন। রাজনীতির ভুল শুধরানো যায়না তাই অন্য কিছু করুন।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
টরন্টো, কানাডা
২২ ফেব্রুয়ারী ২০২১।