আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বাংলা বর্ষবরণ ও ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন করে বাংলার সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হলো এবার যুক্তরাষ্ট্রে।
বাংলাদেশ কনস্যুলেট আয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে গত শুক্রবার সারাদিন ধরে এই আনন্দ অনুষ্ঠানে বিদেশি অতিথিদের পাশাপাশি অংশ নেন প্রবাসী বাংলাদেশিরাও।
অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল একটি বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যার মাধ্যমে বাংলা নববর্ষ ও ঈদুল ফিতর উদযাপনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। এর আগে উদযাপনের অংশ হিসাবে চ্যান্সেরি প্রাঙ্গণ থেকে একটি “মঙ্গল শোভাযাত্রা” বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি দূতাবাসের পার্শ্ববর্তী সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে শোভা পায় আল্পনার রংঙের ছোঁয়া, বাংলার ঐতিহ্য জামদানি শাড়ি, নকশি কাঁথা, তাঁতের তৈরি দৃষ্টিনন্দন রকমারি পণ্য। এছাড়া বায়োস্কোপ, পালকিসহ তুলে ধরা হয় চিরায়ত লোকজ অনুষঙ্গ, যা মুগ্ধ করে প্রবাসী বাংলদেশি ও বিদেশি অতিথিদের। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাংলা গান, কবিতা আর নৃত্য পরিবেশন করা হয়।
অনুষ্ঠানে দক্ষিণ এশিয়া ও জন কূটনীতি বিষয়ক মার্কিন উপ সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বাসেডর কেলি কেইডারলিং সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সংঙ্গে পরিচিতি এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে বিশেষ আমন্ত্রণ জানানো হয় বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের। এতে সাড়া দিয়ে তারা যোগ দেন বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত বর্ণাঢ্য এই উৎসবে।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য অপরাজিতা হক এবং এডিটরস গিল্ডের সভাপতি ও একাত্তর টেলিভিশনের এডিটর-ইন-চিফ মোজাম্মেল বাবু। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. সহিদুল ইসলাম।
রাষ্ট্রদূত কেলি কেইডারলিং বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, লাখ লাখ বাংলাদেশি দারিদ্র্য সীমা থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং বাংলাদেশ এখন মধ্যমে আয়ের শ্রেণীতে প্রবেশ করেছে। তিনি আরো বলেন, তার দেশ এমন একটি দেশের সাফল্য গাঁথার অংশ হতে চায় যে দেশ অর্থনৈতিক শক্তিধর একটি দেশ হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সহিদুল ইসলাম বাংলা নববর্ষ উদযাপনের বর্ণাঢ্য ইতিহাস বর্ণনা করে বলেন, পহেলা বৈশাখ বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং জাতির সার্বজনীন উৎসব। তিনি বলেন, ঈদুল ফিতর সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব; যা তাদের আত্মশুদ্ধি, সহমর্মিতা ও দানের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশী বিভিন্ন ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবার পরিবেশন করা হয় যা বিদেশি অতিথি কতৃক দারুণভাবে প্রশংসিত হয়েছে।