যশোর প্রতিনিধিঃ যশোর যুবদলের সহসভাপতি বদিউজ্জামান ধনিকে খুনের রহস্য উদঘাটনের দাবি করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৬। গ্রেপ্তারকৃত শহরের টিবি ক্লিনিক এলাকার রইস উদ্দিনের ছেলে আল আমিন।
বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) যশোর পুলিশের মুখপাত্র গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিদর্শক রূপন কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশের সুত্রে জানা গেছে, বদিউজ্জামান ধনিকে খুনের ঘটনায় বুধবার (১৩ জুলাই) রাতে কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই মনিরুজ্জামান মণি। এরই মধ্যে মামলায় পাঁচ নম্বর আসামি আল আমিনকে বুধবার রাতে শহরের বেজপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একইসঙ্গে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের কথাও জানিয়েছে র্যাব।
মামলার আসামিরা হলেন, শহরের বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক ফুড গোডাউনের সামনে আশ্রম রোডের আব্দুল আলীমের ছেলে আকাশ (২৫), মোহাম্মদ ফরিদের ছেলে রায়হান (২৪), শংকরপুর চোপদারপাড়া আকবরের মোড়ের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে ও যশোর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শামীম আহমেদ মানুয়া (৪৮), টিবি ক্লিনিক ফুড গোডাউনের পাশের মিরাজুল বিশ্বাসের ছেলে মন্টু ওরফে অপূর্ব ওরফে আলী রাজ (২২), টিবি ক্লিনিক এলাকার রইস উদ্দিনের ছেলে আল আমিন ওরফে চোর আল আমিন (২৫), আফসারের ছেলে মিলন (২৪), শংকরপুর হারান কলোনীর উত্তর পাশের বাবু মীরের ছেলে ইছা মীর (২০) এবং চোপদারপাড়া রোডের মৃত হুজুর ইয়াসিনের বাড়ির পাশের লাভলুর ছেলে রিজভী (২৬)।
র্যাব-৬ যশোরের কোম্পানি কমান্ডার লেফেটেন্যান্ট কর্নেল এম নাজিউর রহমান জানান, গ্রেপ্তারকৃত আল আমিনকে কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
যশোর যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি বদিউজ্জামান ধোনিকে নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শামীম আহমেদ মানুয়ার নির্দেশেই হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সর্বোপরি এলাকায় দলীয় কোন্দল আর রাজনীতির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে ধোনিকে হত্যা করা হয়। মানুয়ার নির্দেশে তার ভাগনে রায়হান হত্যা করে।পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান।
উল্লেখ্য, যশোর শহরের চোপদারপাড়া আকবারের মোড় এলাকায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে যশোর জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি বদিউজ্জামান ধনি (৫২) খুন হয়েছিলেন।
হত্যার তিন প্রত্যক্ষদর্শী ক্লিনার আব্দুল ওয়াদুদ, স্থানীয় স-মিল শ্রমিক শাহজাহান শেখ ও রাজমিস্ত্রি শ্রমিক ফয়সাল হোসেন জানান, মঙ্গলবার ১১টার একটু পর বাসার সামনে শহরের শংকরপুর চোপদারপাড়া আকবরের মোড়ে ইউসুফের চা দোকান থেকে চা পান করেন ধোনি। পরে স্থানীয় শান্তি কমিটির অফিসে বসেছিলেন তিনি। এ সময় একটি রিকশায় করে এসে ধোনিকে কুপিয়ে হত্যা করেন ২০ থেকে ২২ বছরের তিন যুবক। এতে চার থেকে পাঁচ মিনিট সময় নেন তারা। সেই তিনজনের মধ্যে একজন অফিসের ভেতর থেকে ধোনিকে তার জামার কলার ধরে বের করে নিয়ে আসেন। এরপর সড়কের মধ্যে তার ডান পায়ে রামদা দিয়ে কোপ দেন। ধোনিকে টানতে টানতে তার সামনে বৌরানী ফার্মেসির সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি পড়ে যান। সেখানে দুই যুবক তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। একজন ছুরিকাঘাত করতে থাকেন। এই হত্যায় তিন যুবক থাকলেও গেঞ্জি ও টি-শার্ট পরা একজন পাহারা দিচ্ছিলেন। এ সময় এগিয়ে আসলেও তাকে বাঁচাতে পারেননি প্রত্যক্ষদর্শীরা। হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।