আওয়ামী লীগ বিএনপির ত্রাণ কাজে বাধা দিচ্ছে-বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, কোথায় কে বাধা দিয়েছে আপনারা স্পষ্ট করুন, তথ্য-প্রমাণ দিন। অভিযোগ সত্য হলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। মানবিক কাজে বাধা প্রদান আওয়ামী লীগের নীতি নয়।
আজ সোমবার (২২ জুন) জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় সরকারি বাসভবন থেকে দেয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।
কাদের বলেন, সরকার নতুন করে করোনার উচ্চঝুঁকি বিবেচনায় বেশ কিছু জেলা ও সিটি করপোরেশনের সুনির্দিষ্ট এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। এ সকল এলাকায় সর্বসাধারণকে কঠোরভাবে সরকারি নির্দেশনা প্রতি পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। অনুরোধ করছি, ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলার।
তিনি বলেন, সরকার নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও টেস্টিং ক্যাপাসিটি এবং চিকিৎসার সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে ৬০টির অধিক কেন্দ্রে টেস্ট করা হচ্ছে যদিও আমাদের আরও টেস্ট সেন্টার বাড়ানো প্রয়োজন। চিকিৎসা সরঞ্জাম, সুরক্ষাসামগ্রীসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। (তবে) যত প্রস্তুতিই নেয়া হোক না কেন; বিশ্বব্যাপী আজ একটি অভিন্ন কথাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন-সেটি হলো নিজের সুরক্ষা। করোনা প্রতিরোধের সবচেয়ে সেরা কৌশল হিসেবে নিজেকে সচেতন রাখতে হবে, সুরক্ষা দিতে হবে। তাই আসুন, কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে আমরা সুরক্ষার প্রাচীর গড়ে তুলি, নির্মাণ করি সচেতনতার দুর্গ।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনারা জানেন, বাংলাদেশ সফররত চীনা বিশেষজ্ঞ দলটি সরকারের নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীর দায়িত্ব পালনের প্রশংসা করেছেন। নমুনা পরীক্ষা কম হচ্ছে বলে তারা মত প্রকাশ করার পাশাপাশি জনগণের সচেতনতার অভাবের কথা বলেছেন। আমি আবারো সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি। মনে রাখবেন, এক সেকেন্ডের অবহেলা, হাত ধোয়ার ২০ সেকেন্ডের অলসতা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
দেশবাসীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, লক্ষণ দেখা দিলে গোপন করবেন না। নিকটস্থ কেন্দ্রে পরীক্ষা করান। অনেকে লক্ষণ গোপন করে স্বাভাবিক চলাফেরার কারণে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। দয়া করে সবার স্বার্থে ঝুঁকি নেবেন না। অনেকে ফেসবুকসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাওয়া প্রেসক্রিপশন ফলো করে ভয়ানক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন। প্রয়োজনে হটলাইনে যোগাযোগ করুন, টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করুন। অযথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চিকিৎসা ফলো করবেন না। আপনার সমস্যা অন্যের সঙ্গে না-ও মিলতে পারে। এতে আপনি ঝুঁকিতে পড়বেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, সরকার সারাদেশের বিশেষ করে জেলা পর্যায়ে হাসপাতালে আইসিইউসহ জরুরি সেবা সম্প্রসারণ ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের পাশাপাশি এ সংকটকালে বেসরকারি উদ্যোগও যোগ করতে পারে নতুন মাত্রা। সামর্থ্যবানরা যেভাবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন সেভাবে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে পারেন।
এর আগে ওবায়দুল কাদের নোয়াখালীতে স্থাপিত কোভিড-১৯ হাসপাতালের জন্য ব্যক্তিগত তহবিল থেকে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক মো. আবদুল হামিদের কাছে দুটি আইসিইউ-ভেন্টিলেটর হস্তান্তর করেন।