রৌমারী (কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি: মাছের দাম কম না নেওয়াকে কেন্দ্র করে এক মাছ ব্যবসায়ীকে ইচ্ছেমতো পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজীবপুর উপজেলা শহরের নামা বাজার মাছ হাটে এ ঘটনা ঘটে।
বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, বিকালের দিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেকের বড় ভাই আরিফ মাছ বিক্রেতা মোহাম্মদ আলীর কাছ দুটি পাঙ্গাশ মাছ কেনার জন্য দরদাম করেন। পরে ১১০ টাকা কেজিতে দুইটি পাঙ্গাস তিন কেজি ১০০ গ্রাম ওজন হলে তিনি বিক্রাতাকে ১০০ গ্রাম ওজন বাদ দিয়ে দাম হিসাব করতে বলেন। এসময় বিক্রেতা ১০০ গ্রাম ওজন বাদ দিয়ে তিন কেজি মাছের দাম ৩৩০ টাকা দাম বলেন। আরিফ ৩২০ টাকা দিতে চান। বিক্রেতা তখন বলেন ১০ টাকা কম দিলে আমার লোকসান হবে। আপনি যে দাম ঠিক করছেন সেটাই দেন, না হলে লস হবে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আরিফ দোকানির ওপর মাছ ছুড়ে ফেলে দিয়ে টাকা ফেরত দিতে বলেন।
মাছ ফেলে দেওয়ায় বিক্রেতা আলী হোসেন এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এভাবে মাছ ফেলে দিলেন কেন? এতে আরিফ ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে আরও গালমন্দ করে ওই স্থান থেকে সরে গিয়ে মোবাইল ফোনে তার ছোট ভাই ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেককে ডেকে আনেন। কিছুক্ষণ পরেই ঘটনাস্থলে আরিফের ছোট ভাই ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেক নিজের অনুসারীদের নিয়ে এসে ওই মাছ বিক্রেতার ওপর চড়াও হন এবং উপুর্যপুরি কিল ঘুষি মারতে থাকেন। ঘটনার আকস্মিকতায় উপস্থিত মাছ ব্যবসায়ীরা হতভম্ব হয়ে পড়লেও পরে তারা এগিয়ে গিয়ে আক্রান্ত মাছ ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করেন।
হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতা হওয়ার কারণে বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করারও সাহস পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী মাছ বিক্রেতা মোহাম্মদ আলী। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিন কেজি মাছে ১০০ গ্রাম ওজন ছাড় দিয়েছি। আরও যদি ১০ টাকা কম নেই তাহলে আমার কেনা দামও থাকে না। আমাকে মারপিট করলো তো করলো, আবার ক্যাশ বাক্সে থাকা মাছ বিক্রির প্রায় ৯ হাজার টাকাও এখন পাচ্ছি না।’
রাজীবপুর উপজেলা বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিউর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি শুনে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করেছি। তিনি বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।’
রাজীবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নবিউল হাসান জানান, ‘মাছ বিক্রেতাকে মারপিট করার বিষয়ে কোনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’