২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিনত করার লক্ষ্য নির্ধারন করেছে সরকার। এই লক্ষ্যে পৌছতে হলে দেশের মানুষেরও পরিবর্তন দরকার হবে। সকলেই দেশের উন্নয়ন চায় কিন্তু প্রকৃত উন্নয়ন তখোনই হবে যখন দেশের মানুষের মনন বদল হবে। বাংলাদেশেও অনেক সৎ মানুষ রয়েছে তবে সংখ্যাটি খুবউ নগন্য। বেশীরভাগ মানুষেই অসততা করে অর্থ সম্পদ গড়ার ভাবনা করে। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে করে আবার কেউ আছে যারা অবৈধ পথকেই নিজেদের যোগ্যতা ভাবে। মিথ্যা বিলাস জীবন দেখাতেও অনেকে অপরাধ করে। মুখে দেশ প্রেমের কথা বললেও তা নেই তাদের। রাজনৈতিক নেতা শিক্ষিত সমাজ কিংবা পন্ডিত ব্যক্তিরাও এর বাইরে নয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ গরীব জনগোষ্ঠি পেটের দায়ে অপরাধ করে এবং ছুটকা চুরি করে। মূল অপরাধ বোধ শিক্ষিত এবং নেতাদের মধ্যেই বেশী। যারা অর্থবিত্ত্বের মালিক হয়ে এখন উচু তলার মানুষ তাদের মধ্যেও সবাই সৎ উপার্জন করে উচ্চতায় পৌছায়নি। জনগনের অর্থ লুট করে বা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ উপায়ে বিত্ত্বের পাহাড় গড়েছে দেশে এবং বিদেশে। কেউ কেউ অন্ধকার জগতেও জড়িত। এরাই যখন নীতিকথা বলে তখন হাস্যকর মনে হয়।
রাজনৈতিক নেতারাও অনেকে ধোঁয়া তুলসি পাতা নয়। এই নেতারাই যখন জনগনের নামে দেশের উন্নয়নের কথা বলে জনগন মতলবটি ঠিক বুঝে যায়। কিন্তু কিছুই বলতে পারেনা। সব বুঝেও নিষ্পেসিত হয় দু:খ সয়ে। জনগনের কথা বলে ক্ষমতায় গিয়ে অর্থবিত্ত্বের মালিক হয় নেতারাই। সচেতন শিক্ষিত এবং ক্ষমতা প্রাপ্ত ব্যক্তিদের সহযোগিতা ছাড়া অপকর্মটি করা সম্ভব হয়না। দেশের অপরাধ জগতটি নিয়ন্ত্রন করে উচু তলার মানুষেরাই। দেশের আইন প্রশাসন সহ সবই কেনা বেচা হয় এই চক্রটির মাধ্যমে। দরিদ্র জনগোষ্ঠি শারীরিক পরিশ্রম করে উৎপাদন বাড়ালেও নিজেদের ভাগ্য বদল হয়না। চিত্রটি বিশেষ মহল বা গোষ্ঠির নয় দেশটা’ই অপরাধের অভয়ারন্যে পরিনত হয়ে গেছে।
পৃথিবীতে অনেক দেশ আছে যাদের সম্পদ না থেকেও উন্নত দেশের তালিকায়। আবার বহু দেশ সম্পদ থেকেও দারিদ্রতার চরম দুর্ভোগে পতিত। দেশের উন্নয়ন শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়ন নয়- মানসিক উন্নয়নও জরুরী। সেই কারনেই বাংলাদেশের মানুষের নৈতিকতা পরিবর্তন প্রয়োজন। এই পরিবর্তন নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা জরুরী। নেতৃত্বের মধ্যেই দেশপ্রেম আর নৈতিকতা শেখাতে হবে সর্ব্বাজ্ঞে। দলের গঠনতন্ত্র এবং নেতৃত্বের যোগ্যতাটি পরীক্ষিত বিবেচনায় হতে হবে। যেদিন দেশে দেশ্বাত্ববোধ নিয়ে রাজনৈতিক নেতা নির্বাচন হবে সেদিন দিন ক্ষন বলতে হবেনা, দেশ উন্নত হয়ে যাবে। প্রতিযোগিতামূলক নেতৃত্ব দেশ বদলে দিবে। রাজনীতির সজ্ঞাটিও বদলে যাবে তখন। নেতৃত্বের কাছে বিনীত অনুরোধ মানুষের মননশীলতা বদল করার রাজনীতি করুন। দলের পক্ষে অর্থ দিয়ে বাহুবল নয়।