সাগরে নিম্নচাপের সৃষ্টি হওয়ায় দেশের সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় মৌসুমী নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
এটি আজ বিকেল ৩ টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৬০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৪৫০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিমে, মংলা থেকে ২৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।আরও বলা হয়, এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে এবং গভীর সঞ্চরণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে।বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১-২ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।উত্তর বঙ্গোপসাগর অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।এছাড়া আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে দেশের উত্তরাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিমবঙ্গে মাঝারী থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ফলে তিস্তা নদীর পানি সমতল দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।অন্যদিকে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলে কোনও কোনও জায়গায় সাময়িকভাবে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।এছাড়া দেশের উত্তর ও উত্তর-মধ্যাঞ্চলের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর ও বগুড়া জেলার কিছুস্থানে স্বল্পমেয়াদী (৩-৫ দিন) বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, চলতি সপ্তাহের শেষার্ধে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে মাঝারী থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
পরবর্তীতে,বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী দ্বিতীয় সপ্তাহের মাঝামাঝি দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন মেঘালয় ও ত্রিপুরা অঞ্চলে মাঝারী থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।ফলে চলতি সপ্তাহের শেষার্ধে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদীসমূহের পানি সমতল এবং আগামী সপ্তাহের শেষার্ধে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদীসমূহের পানি সমতল দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলে এ অঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা ও হবিগঞ্জ জেলার কোথাও কোথাও স্বল্পমেয়াদী (১-৩ দিন) বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।দেশের প্রধান প্রধান নদ-নদীর যেমন ব্রক্ষ্মপুত্র-যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মার অববাহিকায় চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বন্যার ঝুঁকি নেই। তবে, চলতি মাসের ১৬/১৭ তারিখ থেকে ব্রক্ষ্মপুত্র-যমুনা এবং গঙ্গা নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি শুরু হতে পারে।