ভারতীয় ও চীনা সেনার মধ্যে সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাতে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় এ ঘটনা ঘটে। তাই চীন সীমান্ত লাগোয়া সব রাজ্যে হাই অ্যালার্ট ঘোষণা করা হয়েছে। অ্যালার্ট করা হয়েছে আইটিবিপি-র জওয়ানদের। উত্তরাখণ্ড, হিমাচল, সিকিম, অরুণাচলে টহল জোরদার করা হয়েছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে পিএমও।
এদিকে, লাদাখ নিয়ে সাউথ ব্লকে জরুরি বৈঠকে বসেছেন চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ, ৩ বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী। নিয়ন্ত্রণরেখার উপর নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে সেনাকে। নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর নিজেদের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করতে বলা হয়। বৈঠকের আগে বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। লাদাখ নিয়ে রাতেও সিসিএস-এর বৈঠক হবে। পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে সেনা বাহিনীকে।
অন্যদিকে, লাদাখের গালোয়ান উপত্য়কায় ভারতীয়, চিনা সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে ২০ জওয়ানের মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে ফোনে কথা বলেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও চীনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। বর্তমান পরিস্থিতি সুষ্ঠুভাবে মোকাবিলা করতে উত্তেজনা প্রশমনের রাস্তা খুঁজে বের করতে সম্মত হয়েছেন তাঁরা। এ খবর দিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএনআই।
Two sides should scrupulously & sincerely implement the understanding reached by Senior Commanders on June 6. Troops of both sides should also abide by bilateral agreements&protocols. They should strictly respect&observe LAC & shouldn't take any unilateral action to alter it: MEA https://t.co/dB6yN8hkOO
— ANI (@ANI) June 17, 2020
পাশাপাশি আরেক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, যত শীঘ্র সম্ভব উত্তেজনা হ্রাস করতে রাজি হয়েছে দুদেশ। সীমান্ত সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে তাদের সম্পর্ক। চিনা বিদেশমন্ত্রককে উদ্ধৃত করে তারা আরও জানিয়েছে, চিনা বিদেশমন্ত্রী ভারতকে আবেদন করেছেন, সংঘাতের পিছনে জড়িত দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক, ভারত তার সামনের সারির যোদ্ধাদের সংযত করে নিয়ন্ত্রণে রাখুক। ইতিমধ্যে চিন ও ভারত মেজর জেনারেল স্তরে কথাবার্তা চালাচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৪৫ বছর পরে ভারত-চীন সীমান্ত সংঘর্ষে মৃত্যু হল কোন সেনা সদস্যদের। প্রাথমিক ভাবে এক কর্নেল-সহ তিন ভারতীয় সেনার মৃত্যুর কথা বলা হলেও রাতে ভারতীয় সেনার বিবৃতিতে জানানো হয়, গুরুতর আহত আরও ১৭ জন সেনা প্রবল ঠান্ডার কারণে মারা গিয়েছেন।
সেনা সূত্রের দাবি, এই সংঘর্ষে চীনেরও একাধিক সেনার মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছিল সংখ্যাটা পাঁচ। কিন্তু রাতে সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভারতীয় সেনার হিসেব মতো চীনের তরফে হতাহত ৪৩। চীনা বাহিনী হেলিকপ্টার এনে তাঁদের নিয়ন্ত্রণরেখার এ-পার থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছে।
চীন অবশ্য রাত পর্যন্ত সরকারিভাবে তাদের কোনও সেনার মৃত্যুর কথা স্বীকার করেনি। তবে চিনের বিদেশ মন্ত্রীর মুখপাত্র ‘ভারতীয় প্ররোচনায় হামলা’র কথা স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছেন। সে দেশের সরকারি সংবাদপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’-এর সম্পাদক টুইট করে প্রাণহানির কথাও জানিয়েছেন। সুত্রঃ এপিবি নিউজ, এএনআই।