বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু আলোচিত আইনজীবী ও সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে নালিশ দিয়েছেন। চুন্নুর দাবি, ব্যারিস্টার সুমন এমপি হিসেবে পাওয়া সম্মানী ভাতা ও বরাদ্দের তথ্য ফেসবুকে প্রচার করায় সব সংসদ সদস্য ভুক্তভোগী হয়েছেন। এই কর্মকাণ্ডে বাকি ৩৪৯ জন সংসদ সদস্য সম্পর্কে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মঙ্গলবার (৭ মে) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে ইঙ্গিত করে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আমাদের হাউজের একজন সংসদ সদস্য, নামটা বলতে চাই না। তিনি নতুন নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ফেসবুকে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে আমরা সবাই ভুক্তভোগী।’
সংসদ সদস্যদের ভাতা নিয়ে এমপি সুমনের সোশ্যাল মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘তিনি বলেছেন, আপনারা জানেন এমপিরা কত টাকা বেতন পান? তারা তো বলে না, গোপন করে। তিনি বলেছেন ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা বেতন (মাসিক) পেয়েছেন।
আমরা কত টাকা বেতন পাই তা লুকানোর কিছু নেই, ওয়েবসাইটে গেলে পাওয়া যাবে। তিনি আরও বলেছেন, তিন মাসের মধ্যে ২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। সেটা কীভাবে পেলেন—গমের জন্য তিন কোটি টাকা। আর বাকি ২৫ কোটি টাকা পেয়েছেন রাস্তার জন্য।’
স্পিকারকে উদ্দেশ্য করে চুন্নু বলেন, ‘এই ২৮ কোটি টাকা কি আমি পেয়েছি, আপনি (স্পিকার) পেয়েছেন? প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন? ইতোমধ্যে ফেসবুক দেখে আমাকে অনেকেই বলছেন ২৮ কোটি টাকা পেয়েছেন, এই টাকা কই? তিনি বলেছেন ২৫ কোটি টাকা পেয়েছেন, কিন্তু আমরা তো পাইনি।’
স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে পাঁচ বছরে ২০ কোটি টাকা এমপিদের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বলেন, ‘এইবার বলেছেন পাঁচ বছরের জন্য ২৫ কোটি টাকার প্রকল্পের নাম দেওয়ার জন্য। আগামী ৫ বছরের জন্য কয়টা প্রকল্প করবো তার নাম দিয়েছি আমরা। টাকার সঙ্গে তো আমার কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা নাম দেই, স্থানীয় সরকার বিভাগ জরিপ করে, টেন্ডার করে, তারপর বাস্তবায়ন করে। কিন্তু সংসদ সদস্য বলছেন আমরা ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। শুধু তাই না, তিনি আরও বলেছেন এমপি হলে যদি এত লাভ হয়, তাহলে আরও আগে এমপি হতাম।’
স্পিকারকে উদ্দেশ করে এই এমপি বলেন, ‘আপনি হলেন এই সংসদের অভিভাবক। আমাদের কোনও সদস্য যদি এমন কোনও কথা বলেন, যে কথায় প্রধানমন্ত্রী, স্পিকারসহ ৩৪৯ জন এমপি (সায়েদুল হক সুমন ছাড়া) সম্পর্কে ভুল বার্তা যাবে। তার সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন করার জন্য যদি এ ধরনের কথায় ভুল বার্তা যায়, বিষয়টা আপনি দেখতে পারেন। আমরা এখানে অনেক কথা বলবো, বিতর্ক করবো। এমন কথা বলার অধিকার নেই যাতে ৩৪৯ এমপির ইজ্জত যাবে। তাদের সম্পর্কে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তাই অভিভাবক হিসেবে ওই সংসদ সদস্যকে ডেকে কী করবেন, এটা ব্যবস্থা নেবেন।’
উল্লেখ্য, গত ৮ এপ্রিল ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সংসদ সদস্যদের বেতন-ভাতা সংক্রান্ত ওই স্ট্যাটাসটি দিয়েছিলেন।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম