হিউস্টনে লুনার অ্যান্ড প্ল্যানেটারি কনফারেন্সের ৫০তম সম্মেলনে এই আবিষ্কারের ঘোষণা করা হয়েছে।

গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে বেন্নুকে প্রদক্ষিণ করতে শুরু করে ওসিরিস-রেক্স। অত কাছে পৌঁছনোর পর দেখে, আমেরিকার ১০২ তলার এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংটা উচ্চতায় যতটা (৩৮১ মিটার বা ১ হাজার ২৫০ ফুট), চওড়ায় তার চেয়ে মোটেই বেশি নয় আমাদের কাছে-পিঠে থাকা বেন্নু।

ওসিরিস-রেক্স মিশনের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর, টাকসনে আরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানের ফরাসি অধ্যাপক দাঁতে লরেত্তা ই-মেলে আনন্দবাজার ডিজিটালকে জানিয়েছেন, অবিশ্বাস্য ঘটনার কথা জানা গিয়েছে। ওসিরিক্স-রেক্সের পাঠানো ছবি ও তথ্যাদি থেকে। দেখা গিয়েছে, বেন্নু যেন ফুঁ দিয়ে তার পিঠ থেকে উড়িয়ে দিচ্ছে ছোট ছোট কণাদের। সেই সব কণা, যারা আমাদের সৌরমণ্ডল সৃষ্টির পর (৫০০ কোটি বছর আগে) থেকে এখনও পর্যন্ত বদলায়নি তাদের স্বভাব, চরিত্র, আচার, আচরণ। সেই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণারাই বেন্নুর উপর তৈরি করছে ঘন মেঘ। যা কক্ষপথ থেকে বেন্নুকে মহাকাশযানের ‘চোখ’ থেকে আড়াল করে রাখছে।

লরেত্তার কথায়, ‘‘বেন্নুর পিঠ যে এতটাই রুখুসুখু, তাকে যে অনেক ঝড়ঝাপ্‌টা সইতে হয়েছে সুদূর অতীতে, এত দিন তা আমাদের জানা ছিল না।’’

গবেষকদলের অন্যতম সদস্য, অনাবাসী ভারতীয় বিজ্ঞানী আরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বেন্নুর ফুঁয়ে তার পিঠ থেকে মহাকাশে উড়ে আসা ছোট ছোট কণাদের কথা জানা গিয়েছে একেবারে হালে। এ বছরের ৬ জানুয়ারি। ওই সময় বেন্নুর পিঠ থেকে ওসিরিস-রেক্স মহাকাশযানটি ছিল মাত্র ১ মাইল বা ১.৬১ কিলোমিটার দূরে। খুব কাছের কক্ষপথ থেকে বেন্নুকে প্রদক্ষিণ করার সময়েই ওসিরিস-রেক্সের চোখে ধরা পড়েছে ওই ঘন মেঘ।

ধ্রুবজ্যোতির কথায়, ‘‘দেখেছি, ওই ছোট ছোট কণারা বেন্নুকে তার উপগ্রহের মতো প্রদক্ষিণ করে চলেছে।’’

বেন্নুকে পর্যবেক্ষণ করতে আর তার মাটি পৃথিবীতে নিয়ে আসতে ২০১৬-য় মহাকাশে পাড়ি জমিয়েছিল নাসার ওসিরিস-রেক্স। লক্ষ্য ছিল, বেন্নুর বুকে জল ও খনিজ পদার্থের সন্ধান করা। সেগুলি কতটা পরিমাণে রয়েছে, তার হালহদিশ জানা। পাশাপাশি আগামী দিনে কী ভাবে পৃথিবীর বুকে বেন্নুর আছড়ে পড়ার আশঙ্কা রুখে দেওয়া যায়, তার উপায় খোঁজা।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা