দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হয়েছে। এখন বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত কোনরকম যানজট ছাড়াই যাওয়া যায় ৭ মিনিটে। পদ্মা সেতুর পর এটিও একটি স্বস্তির খবর ঢাকাবাসীর জন্য। বিশেষ করে শহরের অসহনীয় যানজটের মধ্যে এই খবর আনন্দের। আরও অনেক সড়ক এখনো নির্মানাধীন। সব শেষ হলে রাজধানীর চিত্রটি বদলে যাবে। এই সড়ক নির্মানের অর্থনৈতিক চাপ নগরবাসীর উপর পড়েছে। এবং কেউ কেউ এর প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। কিন্তু শহরের যানজট দূর করতে অন্য কোন বিকল্প ব্যবস্থা ছিল কিনা জানা নেই। বিরোধী দল বি এন পি’র নেতারা সরকারের সব কিছুতেই দুর্নীতি দেখে। পদ্মা সেতু নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করেছে। এখন এই এক্সপ্রেসওয়ে নিয়েও সমালোচনা করতে শুরু করেছে।
দুর্নীতি হয়েছে সব সরকারের আমলেই। এখনো হচ্ছে না বলা যাবেনা। কেউ ধোয়া তুলসিপাতা নয়। কিন্তু বর্তমান সরকার দেশে যে উন্নয়ন করে দেখিয়েছে তা অন্যকোন সরকার করতে পারেনি। বি এন পিও রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল। চাইলে তারাও পারত অনেক কিছুই। কিন্তু তা না করে দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান করে দেখিয়েছে এক বার নয় পাঁচবার। সমান্তরাল সরকার গঠন করে হাওয়া ভবন খাম্বা আর লুটপাটের রাজত্ব করেছে। ১০% বখরা না দিয়ে কেউ কোন কাজ করতে পারেনি। এসব তথ্য গনমাধ্যমেই এসেছে এবং মানূষের মুখে মুখে এখনো। রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে দেশের উন্নয়ন করেনি বলেই তারা জনসমর্থন হারিয়েছে। এখন সরকারের উন্নয়ন দেখে নেতাদের গাত্রদাহ হয়। কিন্তু শিল্প খাতটি ধ্বংস করে দিয়েছিল বিদ্যুতের অভাবে।
✪ আরও পড়ুন: ড: ইউনুস
✪ আরও পড়ুন: যুদ্ধটি সহজ হবে না!
✪ আরও পড়ুন: বিএনপি দলের এক দফা
বর্তমান সরকার প্রথমেই বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করেছে। ফলে উৎপাদন এবং রপ্তানী সহজ হয়েছে। রাজস্ব উৎপাদন হয়েছে রেকর্ড পরিমান। আরও একটি খাত অবহেলিত ছিল বি এন পি সরকারের আমলে-খাদ্য উৎপাদন। সারের জন্য গুলি করে কৃষক মেরেছে সার চাইতে গেলে। বর্তমান সরকার ভর্তুকি দিয়ে কৃষি খাতকে উন্নয়নমুখী করে দিয়েছে। যে কারনে ৩০ লক্ষ টন খাদ্য ঘাটতি পুরন করে বাংলাদেশ এখন খাদ্য রপ্তানী করে। দেশ উন্নয়নের দিতীয় ধাপটি ছিল যোগাযোগ ব্যবস্থা। মুন্সিগঞ্জের মাটি কলার জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। মুন্সিগঞ্জের সবরি কলা খেতে মুন্সিগঞ্জ যেতে হত। যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারনে মুন্সিগঞ্জের সবরি কলা বানিজ্যিক সফলতা পায়নি। এখন যমূনা সেতু দিয়ে ঠাকুরগাঁও থেকে কাঁচামাল তুলে প্রান্তিক চাষী ঢাকার বাজার ধরে প্রতিদিন। দক্ষিন বঙ্গের মানুষ দেশের মূল ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছিল। পদ্মা সেতু দক্ষিন বঙ্গকে দেশ বদলের এবং রাজস্ব উৎপাদনে সুযোগ করে দিয়েছে। অভ্যন্তরীণ বানিজ্য প্রসারিত হয়েছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। প্রান্তিক চাষী উৎসাহিত হয়েছে দেশীয় পণ্য উৎপাদনে। এখন পুরো দেশটাই উৎপাদনমুখী হয়ে গেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার কারনে সমগ্র দেশটাই কর্মক্ষম হয়ে গেছে।
কিন্তু ঢাকার অফিস পাড়ায় এখনো দৈনিক ৪০% শতাংশ কর্ম সময় বিনষ্ট হয় যানজটের কারনে। এই এলিভেটেড সড়ক মতিঝিল পর্যন্ত বিস্তৃত হলে হারানো কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। অথচ এই সুবিশাল নির্মান নিয়ে বি এন পি নেতারা অভিযোগ করেই চলেছে। দুর্নীতি হয়েছে দাবী করে নিত্য বক্তব্য দিচ্ছে। সত্যই যদি তাদের কাছে দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমান থেকে থাকে তাহলে জনসম্মুখে প্রকাশ করছে না কেন? আর যদি প্রকাশ না করে তাহলে জনমনে অভিযোগের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। এমন এক সময়ে বি এন পি সরকার পতনের আন্দোলন করছে যখন সরকারের মেয়াদ প্রায় শেষ। দলটি যদি তাদের দাবী পুরনে ব্যর্থ হয় তাহলে দলের অবস্থান কি হবে! দেশ এখন অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে ভাল অবস্থানে।
✪ আরও পড়ুন: রাজনীতি
✪ আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুল
দ্রব্যমূল্যের বিড়ম্বনা দেশে আছে। কিন্তু তা শুধু আমাদের দেশেই নয় সব দেশে সবখানে। এই খবর কি বি এন পি নেতারাও জানেনা?। যুদ্ধবিগ্রহ আর অর্থনৈতিক মন্দাভাব বিশ্বের সব দেশে। তবুও বাংলাদেশে বাজারের প্রাপ্তির কমতি নেই। অনেক উন্নত দেশেও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য পাওয়াও যাচ্ছেনা। বি এন পি’র কাছে এমন কি ম্যাজিক রয়েছে যা দিয়ে তারা দ্রব্যমূল্য কমিয়ে ফেলবে? তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চেয়ে আন্দোলন করছে বি এন পি। কিন্তু নির্বাচন তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হলেও কি বি এন পি তাদের লক্ষ্যে পৌছতে পারবে?
নির্বাচন করতে কর্মীবাহিনীকে সংগঠিত রাখতে হয়। বি এন পি’র কোন কমিটিই পুর্নাঙ্গ নয়। ১৪ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকায় জনসমর্থনের পাশাপাশি কর্মীবাহিনীকেও হারিয়েছে দলটি। জামাতের সমর্থন না পেলে বড় কোন সভাও করতে পারবেনা বি এন পি। নেতৃত্বে কোন্দল আর ব্যক্তিগত বিদ্বেষে শীর্ষ নেতারাও বিভক্ত। সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে নেতারা যা বলেন তা’কি সব সত্য বলেন? ডিসেম্বরের ১০ তারিখে সরকারের পতন হবে তা সত্য হল না কেন? সরকার সেপ্টম্বর মাসেও বহাল তবিয়তে সরকার পরিচালনা করে যাচ্ছে! নেতাদের এই হুঙ্কার কি তাহলে মিথ্যা ছিল? এখনো বি এন পি নেতারা বলেন সরকারকে পদত্যগে বাধ্য করা হবে-কবে?
✪ আরও পড়ুন: রাজকাহন
✪ আরও পড়ুন:গণতন্ত্র
রাজনীতিতে মিথ্যা আশ্বাস কিংবা অসত্য বক্তব্য দেওয়া দলের জন্য বিপদ ডেকে আনে। জনগন দলের উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। বি এন পি এভাবেই তাদের জনসমর্থন হারিয়েছে। তাই কারনে যে কোন মূল্যে বি এন পি এখন নির্বাচনটি বানচাল করতে চায়। তারা চায় একটি অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসুক। অনির্বাচিত সরকার সদ্য বিদায়ী সরকারের সমালোচনা করে। বি এন পি সেই প্রচারনাটি ব্যবহার করে জনগনের কাছে যেতে চায়।
✪ আরও পড়ুন:বিদেশী প্রেস্ক্রিপশনে শেখ হাসিনা চলেননা
✪ আরও পড়ুন: বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন এক চরম দু:সময় চলছে
ভুল ভ্রান্তি সব সরকারের আমলেই হয়। এই সরকারের আমলেও হয়েছে। অনেক এম পি মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু এমন কোন ভুল সরকার করেনি যা জনবিক্ষোভ সৃষ্টি করতে পারে। বি এন পি না বুঝে সেই ভুলটিই করেছে। না বুঝেই সরকার পতনের আন্দোলনে নেমে পরেছে জনসম্পৃক্ততা ছাড়া। বি এন পি’র এই আন্দোলন সফল হবেনা। জনগন দেশে উন্নয়নের ফসল পেতে শুরু করেছে। বর্তমান সরকারের চেয়ে উত্তম কোন কর্মসূচী বি এন পি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারেনি। অনেক অভিযোগ অনুযোগ থেকেও দেশের মানুষ শেখ হাসিনা কেই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে চায়। বিভিন্ন জরিপে এমনটাই দেখানো হয়েছে। বিদেশীদের উস্কানি পেয়ে বি এন পি নেতারা উৎফুল্ল হয়ে পড়েছিল। সম্প্রতি বিদেশীদের বক্তব্যে সেই আশাটিও আর নেই। বিরোধী দল হিসাবে বি এন পি চায় শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য, আর এটাই বি এন পি’র রাজনীতি।
*** আজ ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি | দুপুর ২:২৯ | বুধবার ***
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি