আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ইউরোপজুড়ে জ্বালানি সংকটে দাম আকাশ ছোঁয়ার মধ্যেই বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক গ্যাস পোড়াতে শুরু করেছে রাশিয়া। জ্বালানি গবেষণা কোম্পানি রিস্তাদ এনার্জি বিবিসি নিউজকে দেওয়া এক বিশ্লেষণে একথা জানিয়েছে। স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে রাশিয়া তাদের একটি গ্যাস স্থাপনায় প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক গ্যাস পুড়িয়ে ফেলছে যার আর্থিক মূল্য প্রায় এক কোটি ডলার।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা গেছে, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় জ্বালানি প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রমের নতুন এই স্থাপনাটি ফিনল্যান্ড সীমান্তের কাছে, সেন্ট পিটার্সবার্গের উত্তর-পশ্চিমে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ গ্যাস আগে জার্মানিতে রপ্তানি করা হত। যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত বিবিসিকে বলেছেন, রাশিয়া এই গ্যাস পুড়িয়ে ফেলছে। কারণ, এটি কোথাও বিক্রি করার নেই।গ্যাস পোড়ানোর ফলে যে বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসৃত হচ্ছে তাতে জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাব বেড়ে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রতিদিন প্রায় ৪৪ লাখ ৩০ হাজার কিউবিক মিটার গ্যাস পোড়ানো হচ্ছে। রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের উত্তর-পশ্চিমের পরটোভায়া তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) প্ল্যান্ট থেকে এই গ্যাস আসছে। জার্মানিতে গ্যাস পৌঁছে দেওয়া নর্ডস্টিম ১ পাইপলাইনের একটি কমপ্রেসর স্টেশনের কাছে এ গ্যাসক্ষেত্র অবস্থিত যেখান থেকে সমুদ্রের তল দিয়ে জার্মানিতে গ্যাস পাঠাত রাশিয়া।
গত জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে রাশিয়া যন্ত্রিক ত্রুটির কথা বলে এই পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। তবে জার্মানির অভিযোগ, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর গ্যাস নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে। কিন্তু গবেষকরা ওই প্ল্যান্টে গত জুন থেকে উল্লেখ্যযোগ্য মাত্রায় উষ্ণতা ছড়ানোর বিষয়টি খেয়াল করেছেন। এর জের ধরে ইউরোপ জুড়ে জ্বালানির মূল্য নজিরবিহীন হারে বেড়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, এবছরের আরো কিছু আগের দিকে ফিনল্যান্ডের কিছু নাগরিক প্রথমে দেখতে পান যে রাশিয়ার সীমান্তের ওপারে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। তারা মনে করেন সেখানে হয়তো কোনো দুর্ঘটনা ঘটেছে। নর্ডস্ট্রিম ওয়ান পাইপলাইন যেখান থেকে শুরু হয়েছে, পোর্তোভায়ার এই স্থাপনাটি তার খুব কাছে। এই পাইপলাইন দিয়েই জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। জুন মাসের পর গবেষকরা দেখতে পান যে ওই স্থাপনা থেকে বেরিয়ে আসা তাপ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে গেছে।
ধারণা করা হয় ওই স্থাপনায় প্রাকৃতিক গ্যাস পুড়িয়ে ফেলার কারণে সেখানে এই তাপ উৎপন্ন হচ্ছে।