ডিবিএন ডেস্কঃ বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ফের ব্যারেল প্রতি ৮০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। আজ বৃহস্পতিবার রয়টার্স তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম আগের দিনের চেয়ে প্রায় ১ শতাংশ বেড়েছে। এদিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৮২ ডলার ১৮ সেন্টে বিক্রি হচ্ছে। আর ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দর উঠেছে ৮৪ ডলার ২৮ সেন্টে। এই দর গত দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন আতঙ্কে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট তেলের দাম কমতে কমতে ৬৬ ডলারে নেমে গিয়েছিল। ব্রেন্ট তেলের দর কমে হয়েছিল ৬৮ ডলার।
তিন-চার দিন ওই একই জায়গায় স্থির ছিল তেলের বাজার। কিন্তু ওমিক্রন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়লেও করোনার নতুন ওই ধরনে আক্রান্ত হয়ে মানুষ খুব একটা মারা না যাওয়ায় এই ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক বেশ খানিকটা কেটে যায়। এতে বিশ্বে তেলের চাহিদা বাড়বে-এ সম্ভাবনাকে সামনে রেখে আবার বাড়তে শুরু করে দাম। সেই ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত রয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরবরাহ কম এবং ওমিক্রন করোনভাইরাস নিয়ে সম্ভাব্য আতঙ্ক-উদ্বেগ কমার কারণে বুধবার তেলের দাম দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছে।
ইউএস ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল মঙ্গলবার বলেছেন, ‘মার্কিন অর্থনীতি ওমিক্রন ঢেউ সহ্য করতে পারবে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি এবং বিশ্বের বৃহত্তম তেল ভোক্তাদের খুব সামান্য প্রভাব ফেলতে পারে। আর এই প্রভাব মোকাবেলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কঠোর মুদ্রানীতি শুরু করার জন্য প্রস্তুত আছে।’
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। করোনা মহামারির মধ্যেও টানা বেড়েছে তেলের দাম। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করায় তা আরও ঊর্ধ্বমুখী হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক বিনিয়োগ কোম্পানি ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাক্সও মাস চারেক আগে তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছিল, কোভিড-১৯ এর কারণে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় যে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছিল তা দূর হচ্ছে। পাশাপাশি দেশে দেশে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া গতি পেয়েছে। ফলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে গত বছরের জানুয়ারি মাসে জ্বালানি তেলের দাম ছিল গড়ে প্রতি ব্যারেল ৪৯ ডলার। এরপর থেকে গড়ে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ছিল ফেব্রুয়ারি মাসে ৫৩ ডলার, মার্চে ৬০, এপ্রিলে ৬৫, মে মাসে ৬৪, জুনে ৬৬, জুলাইয়ে ৭৩ এবং আগস্টে ৭৪ ডলার। অক্টোবর মাসে এই দাম ৮৫ ডলার ছাড়িয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছিল, শিগগিরই তা ১০০ ডলার হয়ে যেতে পারে।