মহামারি প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিনামূল্যে নমুনা পরীক্ষা বন্ধ করতে যাচ্ছে সরকার। ব্যয়বহুল এই পরীক্ষার অপব্যবহার ঠেকানোর পাশাপাশি খরচ কমাতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এক হাজার টাকার মধ্যে রাখা হচ্ছে নমুনা পরীক্ষার ফি। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফি নির্ধারণ করে দিলে অনেক মানুষ পরীক্ষার আওতার বাইরে থেকে যাবে।
করোনাভাইরাস শনাক্তে ২১ জানুয়ারি থেকে বিনামূল্যে আরটি পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা শুরু করে সরকার। শুরুর দিকে পরীক্ষা সীমিত ছিল শুধু আইইডিসিআরের ল্যাবে। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় নমুনা পরীক্ষার পরিসর বাড়তে থাকে। এখন ৬৮টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ল্যাবে পরীক্ষা চলছে। দৈনিক নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে পনেরো থেকে বিশ হাজারের মধ্যে।
১১৩তম দিন পর্যন্ত সারা দেশে সাত লাখের বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর সিংহভাগই করা হয়েছে বিনামূল্যে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নমুনা পরীক্ষার জন্য সাড়ে তিন হাজার টাকা ফি বেঁধে দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিনামূল্যে নমুনা পরীক্ষার সুযোগে অপ্রয়োজনেও পরীক্ষা করছেন অনেকে। এতে পরীক্ষার ওপর ক্রমশই চাপ বাড়ছে। বর্তমানে এ খাতে প্রতিদিন সরকারের খরচ হচ্ছে প্রায় আট কোটি টাকা। অনির্দিষ্টকালের জন্য এভাবে ব্যয় বহন কঠিন, তাই নমুনা পরীক্ষার জন্য এক হাজার টাকার মধ্যে ফি নির্ধারণ করতে যাচ্ছে সরকার।
তবে, নাগরিকরা মনে করেন, মহামারির চিকিৎসা খরচ সরকারেরই বহন করা উচিত।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘নমুনা পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করলে অনেকে পরীক্ষার আওতার বাইরে থেকে যাবেন। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শিগগিরই ফি নির্ধারণ করে দেয়ার ঘোষণা আসছে।