আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ব্যাপক সহিংসতার পর ইরাকের রাজধানী বাগদাদের ‘গ্রিন জোনখ্যাত’ এলাকা থেকে বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে নিল দেশটির প্রভাবশালী শিয়া নেতা মুক্তাদা আল সদরের সমর্থকরা। এদিকে দেশটির অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ার কথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী। আল জাজিরা এসব তথ্য জানায়।
ইরাকের প্রেসিডেন্ট আগাম নির্বাচনের মাধ্যমে চলমান সংকট নিরসন সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন।
টানা দুদিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর দেশটির প্রভাবশালী শিয়া নেতা মুক্তাদা আল সদরের সমর্থকরা রাজধানী বাগদাদের গ্রিন জোনখ্যাত এলাকা থেকে বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিন নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সহিংসতায় অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটে। এরপরই আল সদর প্রাণহানির ঘটনায় ক্ষমা চেয়ে তার সমর্থকদের বিক্ষোভ বন্ধের নির্দেশ দেন। টেলিভিশনে এক ভাষণে ওই এলাকা ছেড়ে যেতে অনুসারীদের এক ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন তিনি। তার ঘোষণার পরই বিক্ষোভকারীরা সরে যেতে শুরু করেন। বিক্ষোভকারীরা চলে যেতে থাকলে কারফিউ তুলে নেয়ার কথা জানায় ইরাকের সেনাবাহিনী।
এদিকে, ইরাকের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকলে নিজের পদ ছেড়ে দেয়ার কথা জানিয়েছেন দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল কাদিমি। এ সময় তিনি সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় তদন্তের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বুলেট ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও যারা বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়ে রক্তপাত ঘটিয়েছে তাদের চিহ্নিত করতে আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। এখন থেকে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা, মতবিরোধী কিংবা কলহ সৃষ্টির চেষ্টা করা হলে, আমি পদশূন্য ঘোষণা করে আমার নৈতিক দায়িত্ব পালন করব।
প্রাথমিকভাবে সহিংসতা থেমে যাওয়ায় স্বাগত জানিয়েছেন ইরাকের প্রেসিডেন্ট বারহাম সালিহ। তবে রাজনৈতিক সমস্যা এখনও শেষ হয়নি বলে সতর্ক করেছেন তিনি। চলমান সংকট নিরসনে আগাম নির্বাচনের কথা জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ইরাকের বর্তমান পরিস্থিতি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এ পরিস্থিতি চলতে দেয়া যাবে না। নির্বাচন হলে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা আসবে। ইরাকের মানুষের আকাঙ্ক্ষাও পূরণ হবে।
উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে দেশটির পার্লামেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন কেন্দ্র করে নিজ দলের আইনপ্রণেতা ও ইরানপন্থি শিয়া নেতাদের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ দেখা দেয়। এরপরেই থেমে যায় দেশটির সরকার গঠন প্রক্রিয়া।