বাসচাপায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার চতুর্থ দিনের মতো সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে, টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন সহপাঠীরা।
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে চুয়েটের সামনের সড়কে অবস্থান নেন তারা। এর আগে, সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার ও বুধবারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় ৩ দিন ধরে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মঙ্গলবার চুয়েট কর্তৃপক্ষ, বাস মালিক সমিতি, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। সভায় ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি গঠনের পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে দুই শিক্ষার্থীকে চাপা দেওয়া শাহ আমানত বাসের চালক মো. তাজুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে নগরীর কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মো. তাজুল ইসলাম (৪৯) রাউজান থানার চিকদাইর এলাকার করম আলী হাজীর বাড়ির আবদুল খলিলের ছেলে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী আশিকুল ইসলাম বলেন, নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে বাস মালিক সমিতি দুই লাখ টাকা করে দেওয়ার কথা বলেছে। এটা লজ্জাজনক।
শাহ আমানত ও এবি ট্রাভেলসের বাস এ সড়কে চলবে না বলে জানিয়েছে প্রশাসন, কিন্তু রুট পারমিট বাতিল করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ৫টি বাস ও ৪টি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ার দাবিও পূরণ হয়নি। সব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
মঙ্গলবার সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একেএম গোলাম মোর্শেদ খানকে প্রধান করে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
জানতে চাইলে বুধবার একেএম গোলাম মোর্শেদ খান যুগান্তরকে বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও দফায় দফায় মিটিং করেছি। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট জমা দিতে পারব।
মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আয়োজিত সভায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। আহত শিক্ষার্থীকে দেওয়া হবে ৩ লাখ টাকা।
এছাড়া বাস মালিক সমিতি নিহতের প্রত্যেক পরিবারকে দুই লাখ টাকা ও আহতকে ১ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আহত শিক্ষার্থীর সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, কাপ্তাই রাস্তা সম্প্রসারণ কাজ এক মাসের মধ্যে শুরু হবে। রাস্তায় যাতে বেপরোয়া গাড়ি চালাতে না পারে সেজন্য স্পিড ব্রেকার দেওয়া হবে। যানবাহনের ফিটনেস, রুট পারমিট দেখার জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।
ডিবিএন/ডিআর/তাসফিয়া করিম