বলা হচ্ছিল এবারের বাজেটের ‘ফোকাস পয়েন্ট হবে’ করোনা দুর্যোগ। সে হিসেবে স্বাস্থ্যখাতেই মনোযোগ থাকার কথা সবচেয়ে বেশি। বাজেট বলছে সর্বোচ্চ বরাদ্দের ক্রমে ৯ম স্থানে আছে স্বাস্থ্যখাত। করোনা সামলাতে বাজেটে থোক বরাদ্দ থাকছে ১০ হাজার কোটি টাকা। তবে করোনা মহামারিতে বেরিয়ে আশা স্বাস্থ্যখাতের জীর্ণ দশাকে সুস্থতা দিতে স্বাস্থ্যে ৩ বছরের মধ্যম ও ১০ বছরের দীর্ঘ মেয়াদি ‘মেগা প্ল্যান’ ঘোষণা করা হয়েছে এবারের বাজেটে।
দেশের নামকরা মেডিকেলেরই যদি হয় এ দশা তবে বাকিসব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কী অবস্থা হতে পারে তা কারোরই অজানা নয়। নেই পর্যাপ্ত কিট, নমুনা পরীক্ষায় ধীর গতি, নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী কিংবা আইসিইউ সুবিধা। সর্বত্রই শুধু নিদারুণ নেই আর নেই এর হাহাকার।
২০২০-২১ অর্থবছরে এ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরের তুলনায় যা সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যা বরাদ্দ হয় তার বড় একটি অংশই আবার খরচ করতে না পারার কারণে ফিরে যায়। বাকিটুকুর মধ্যেও চলে লুটপাটের উৎসব। এ করোনা দুর্যোগের মধ্যে দেখা গেল সুরক্ষা সামগ্রী কিনতেও চলেছে নয় ছয়।
অর্থনীতিবিদ নাজনীন বলেন, এ করোনাকালে স্বাস্থ্যখাতে যতটুকু বরাদ্দ দেয়া হয়েছে সেটি যেন ঠিকমত কাজে লাগে সেদিকে আমাদের মনোযোগ বেশি দেয়া দরকার।
বিএমএ সাবেক সভাপতি ডা. রশিদ ই মাহবুব বলেন, স্বাস্থ্যখাতের যে বরাদ্দটা এটা বাড়ানোর আগে স্বাস্থ্যখাতটা সংস্কার করতে হবে। অন্যথায় যা আছে তার উন্নতি হবে না।
যন্ত্রপাতি কেনার দিকে যতটা আগ্রহ দেখা যায় সেই যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মানুষ আছে কি না তা খোঁজ নেবার আগ্রহ দেখা যায় না। আবার যেখানে গোটা দুনিয়ায় বর্তমানে আইসিইউএর জন্য হাহাকার সেখানে খোদ রাজধানীর শিশু হাসপাতালেই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে করোনার আইসিইউ শয্যা।
বিশেষজ্ঞদের জিজ্ঞাসা, বাজেটে বরাদ্দ বাড়লেই কি সুস্থ হবে স্বাস্থ্যখাত? অতীতের অভিজ্ঞতা তেমনটি বলে না। তারা বলছেন, সরষের ভুত তাড়াতে না পারলে বরাদ্দের আকার যতই বড় হোক স্বাস্থ্যের সেবা অধরাই থেকে যাবে। এ জন্য প্রয়োজন স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং সুষ্ঠু ব্যয়ব্যবস্থাপনা।