বিশ্ববাসী এখন বাংলাদেশ সম্পর্কে ভাল ধারনা পোষন করে। সবাই বলে বাংলাদেশ উন্নতি করেছে। বাংলাদেশের বদনাম করে বাঙালীরাই বেশী। বাঙালী গল্প করতে ভালবাসে আর গল্পের আসরে সরস বিষটি হল রাজনীতি। লঞ্চে, ষ্টিমারে, ট্রেনে কিংবা রেস্তোরায় তিন জন একসাথে হলেই রাজনৈতিক চর্চা শুরু হয়ে যায়। যুক্তি তর্ক দিয়ে বুঝিয়ে দেয় দেশটাকে কিভাবে ধংস করে দিচ্ছে সরকার। রাজনৈতিক আলোচনায় ভারতের নামটি আসবেই। কথা শুনে মনে হবে একেক জন অধ্যাপক এবং সরকার তাদের পরামর্শ না শুনে ভুল করছে। ৫০ বছর পরে ৭১ সালে কি ঘটেছিল তা নিয়ে বাড়াবাড়ি করারও সমালোচনা করেন অনেকে। ৭১ সালের কথা শুনলে গাত্রদাহ হয় তাদের। এই গাত্রদাহ অকারনে নয় তাইত তারা ইতিহাস বদলে দিয়েছিল। ভারতের কাছ দেশ বিক্রি করে দেওয়ার দুঃখে শহীদ হয়ে যান পাকিস্তানের নামে। অথচ পাকিস্তান এখন অকার্যকর আর ভারতে বলতে শুরু করেছে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। কি করে বাংলাদেশ এগিয়ে গেলো তা নিয়ে ভারতের জোনগণ ক্ষুদ্ধ হয়ে দোষছে সরকার আর নেতাদের। পৃথিবীতে যারা উন্নয়ন নিয়ে সমীক্ষা প্রকাশ করেন তারাও বলছে বাংলাদেশের উন্নয়নে এগিয়ে গেছে। তাহলে, আমাদের মধ্যে এমন সঙ্কা ছড়াচ্ছে কারা এবং কেন? অনেককেই বলতে শুনি সুষ্ঠ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ পচিশটির বেশী আসন পাবেনা। আবার তারাই বলেন শেখ হাসিনা সৎ। এমন বক্তব্যে আসলেই মানুষ এখন বিভ্রান্ত হচ্ছে।
তিন মেয়াদে আওয়ামো লীগ সরকারের সাফল্যের ফিরিস্থি দেওয়ার দরকার নেই। জনগনই বলছে এই উন্নয়ন অন্য কোন সরকার দেখাতে পারেনি। পদ্মা সেতু নির্মান ছাড়াও বিদ্যুৎ, বানিজ্য এবং অর্থনীতির অবস্থাটি হাতে গুনাই বলা যায়। বাংলাদেশের কোন নির্বাচনটিকে নিন্দুকের সুষ্ঠ নির্বাচন দাবী করেন বলেননা। গনতন্ত্র চর্চার নজিরও দেখেছে বাঙালী। পাকিস্তানী পতাকা নিয়ে মিছিল করা দেখেছে রাজ পথে। দেশের প্রখ্যাত রাজাকার, আল-বদর আর আল- সামসের যুদ্ধাপরাধীরা পতাকা উড়িয়ে ঘুরেছে। শাসন করেছে দেশ। মন্ত্রী,প্রধান মন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি হয়েছে রাজাকার আর যুদ্ধাপরাধী। এমন শাসনে ফিরে যেতে যাদের মনবাসনা তারা মুখে গনতন্ত্রের কথা বললেও ক্ষমতায় যায় খুন করে আর চুরি করে। নির্বাচনে তারা ভয় পায়। নির্বাচন দাবী করে কিন্তু নির্বাচন দিলেই বলে সুষ্ঠ হবেনা নির্বাচন। লোকদেখানো প্রচারনা করে সটকে পরে নির্বাচন থেকে। দেশের মানুষ কি কারনে তাদের নির্বাচিত করবে তার তাদেরও জানা নেই। নিজেরাও জানেনা কে তাদের নেতা আর কার নির্দেশে দল চলছে। কে দিচ্ছে টাকা পয়সা।
পৃথিবীর এমন কোন দেশ নেই যেখানে সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা হয়না কিন্তু, জাতীয় ইস্যুতে এক হয়ে যায় তারা । জাতীয় দুর্যোগ এলে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারকে সমর্থন দেয় মতবিরোধ ভুলে। বাংলাদেশে জাতীয় দুর্যোগকেই রাজনৈতিক কৌশল মনে করে নেতারা। পরিভাষাটিও সৌজন্যতা মানেনা। মিথ্যা আর অসত্য বক্তব্য দিয়ে জনগনের সমর্থন পেতে মরিয়া হয়ে উঠে। গনতন্ত্রের কথা মুখে বলে, পেছনের পথ খোঁজে প্রভুদের ইঙ্গিতে।
কোভিড-১৯ (করোনা) বিশ্বকে অচল করে দিয়েছে। আমেরিকার মত দেশে করোনায় মারা গেছে প্রায় তিন লক্ষ মানুষ আর এখনো মারা যাচ্ছে ৩০০০ করে প্রতিদিন। ট্রাম্প এই করোনাকে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হওয়ায় নির্বাচনে হেরে গেল। আর বাংলাদেশ সাহসিকতার সাথে পদক্ষেপ নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মেনে। প্রনেদনা দিয়ে দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠান স্বচল করে রেখেছে। করোনায় মৃতের সংখ্যাটিও নিয়ন্ত্রনে রেখেছে। বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশে করোনায় মৃতের হার অনেক কম। সরকারের নির্দেশ মান্য করলে এই সংখ্যাটি আরও কম হতে পারত। বিরোধী দলের নেতারা জনগনকে শতর্কতামুলক পরামর্শদিলে এই মহামারী নিয়ন্ত্রণে আরও ভাল ফল পাওয়া যেত।
আজিজুর রহমান প্রিন্স
টরন্টো, কানাডা
১৬ ই জানুয়ারি ২০২১।